৬৮০০ বছর পর আজ থেকে দেখা যাবে ধূমকেতু ‘নিওওয়াইস’
তীব্র গতিবেগে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ধূমকেতু। যার আলোর পরিধি হবে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ। মঙ্গলবার থেকে মহাকাশে দেখা যাবে ধূমকেতুর সেই অভূতপূর্ব দৃশ্য। এ ধূমকেতু খালি চোখেই দেখা যাবে। যার নাম সি/২০২০ এফ৩। তবে ধূমকেতুর পোশাকি নামকরণ হয়েছে নিওওয়াইস।
বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, দুরন্ত গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে ধূমকেতুটি। এ ধরনের ধূমকেতুর দৃশ্য দেখতে প্রয়োজন হয় দূরবীক্ষণ যন্ত্রের। তবে খালি চোখেই দেখা যাবে। কলকাতা থেকে পরিষ্কার ধূমকেতুর আলো দেখা যাবে। টানা ২০ দিন সূর্যাস্তের পর একই জায়গা থেকে ২০ মিনিট করে দেখা যাবে সেটি। প্রতিদিন সূর্যাস্তের পর উত্তর-পশ্চিম আকাশে জ্বলজ্বল করে উঠবে।
বিড়লা তারামণ্ডলের কর্মকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারি বলেন, গত ২৭ মার্চ ধূমকেতুটি আবিষ্কৃত হয়। সূর্যকে একবার চক্কর মেরে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসছে। খুব উজ্জ্বল এটি। খালি চোখেই দৃশ্যমান হবে।
জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে ধূমকেতুটি দেখা যাচ্ছিল। তবে সেটা উত্তর-পূর্ব আকাশে সূর্যোদয়ের আগে দেখা যাচ্ছিল। ১৪ জুলাই থেকে দেখা যাবে উত্তর-পশ্চিম আকাশে। সূর্যাস্তের কিছুটা পর থেকে।
আগামী ২২ জুলাই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসছে নিওওয়াইস। সেদিন ভূপৃষ্ঠ থেকে সেটির দূরত্ব হবে ১০ কোটি ৩৫ লাখ কিলোমিটার। সূর্যাস্তের পর উত্তর-পশ্চিম দিগন্তের ১০-১৫ ডিগ্রি ওপরে দৃশ্যমান হবে।
দেবীপ্রসাদবাবু বলেন, ১৯৯৭ সালে হেলবোপ ধূমকেতু পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতার আশপাশ থেকে দেখা গিয়েছিল। এরপরেও কিছু ধূমকেতু এসেছে। তবে দূরবীন ছাড়া সেগুলি দেখা সম্ভব হয়নি। নিওওয়াইসকে কিন্তু খালি চোখেই দেখা যাবে।
তিনি আরো বলেন, ধূমকেতু সূর্যের যত কাছাকাছি আসে সেটির লেজ দৃশ্যমান হয়। হিসাব অনুযায়ী ৬৭৬৬ বছর পর আবারো এ নিওওয়াইস সূর্যের কাছাকাছি আসবে।
ধূমকেতু সৌরজগতের বহির্ভাগের বাসিন্দা। যেখানে তাপমাত্রা ভীষণ কম। ফলে চারদিকে বড় বড় বরফ ভেসে বেড়ায়। এমনকি জলীয় বরফ, কার্বন ডাই অক্সাইড বরফ, মিথেন বরফের খণ্ড ভেসে বেড়ায়।
এসবের আয়তন পাঁচ থেকে ১০-১২ কিলোমিটার হয়। এ বরফের খণ্ড সূর্যের আকর্ষণে চারিদিকে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরে যায়। সূর্যের তাপে বরফ গলে গিয়ে বাস্পীভূত হয়ে কোটি কোটি কিলোমিটার লম্বা ঝাঁটার মতো দেখতে লেজ সৃষ্টি করে।