271449

৭২টি বিষাক্ত সাপের সঙ্গে তিনদিন এক খাঁচায় সময় কাটিয়ে বিশ্ব রেকর্ড

১৯৮৬ সালে ইন্ডিয়াতে এক ব্যক্তি ৭২ ঘণ্টা ৭২ টি বিষাক্ত সাপের সঙ্গে এক খাঁচায় আবদ্ধ থেকে বিশ্ব রেকর্ড করেন। তার মধ্যে ছিল ২৭ টি মনসেললেট কোবরা,২৪ টি রাসেল ভাইপার, নয়টি বিনোসলেট কোবরা, আটটি ব্যান্ডেড ক্রেট এবং চারটি সাধারণ সাপ। সাপের কোন কামড় ছাড়াই তিনি নিরাপদে খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি প্রমাণ করেন যে, সাপের কোনো ক্ষতি না করা পর্যন্ত সাপ কখনো কারো ক্ষতি করে না।

এই ব্যক্তির নাম ছিল নীলিমকুমার খায়ের। তখন তার বয়স মাত্র ২৮ বছর। সেসময় তিনি একটি একটি পাঁচতারা হোটেলে রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজ করতেন। মহারাষ্ট্র ট্যুরিজম বিভাগের সঙ্গে তার  আগে থেকেই বেশ পরিচিতি ছিল। এর কারণ তার সরীসৃপদের প্রতি প্রেম। তিনি নয় বছর আগে বোম্বেয়ের নিকটবর্তী মাথেরানে একটি হলিডে হোমে কাজ করতেন।

সাপেদের সঙ্গে তার বেশ সখ্যতাও ছিল

সাপেদের সঙ্গে তার বেশ সখ্যতাও ছিল

নীলিমকুমার খায়ের সরীসৃপ প্রাণীদের খুবই ভালোবাসেন। এদের হত্যা করা তিনি একেবারেই পছন্দ করতেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে, এক ব্যক্তি একটি পার্কে ১৮ টি বিষাক্ত এবং ছয়টি আধা-বিষাক্ত সাপের সঙ্গে ৪০ ঘন্টা ছিলেন। এটি দেখেই নীলিমকুমারের মাথায় প্রথম বিশ্ব রেকর্ড করার ভাবনা আসে। তিনি ভেবেছিলেন যে কোনো ভারতীয় এই ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ড গড়ারযোগ্য। কেননা ভারত সাপের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। সেদিক থেকে এদেশের মানুষের সাপ ভীতি কম থাকবে।

মাত্র ২৮ বছরের এক যুবকের এমন সিদ্ধান্ত সবাই পাগলামি ভেবেছিল

মাত্র ২৮ বছরের এক যুবকের এমন সিদ্ধান্ত সবাই পাগলামি ভেবেছিল

তবে যখন কিনা তিনি এই কাজ করতে বের হন, লোকেরা ভাবতে শুরু করেন যে সে পাগল হয়ে গেছে। অনেক বাধা বিপত্তির পর অবশেষে ২০ শে জানুয়ারী, তিনি পুনের বিজে মেডিকেল কলেজের খেলার মাঠে একটি কাঁচের কেবিনে প্রবেশ করেছিলেন। ভেতরে রাখা হয়েছিল চেয়ার। সেখানে বসে বিশ্রাম নেয়ার সময় প্রায়শই তার কাছে আরোহণকারী সাপগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। সাপগুলো বারবার তার শরীরের উপর উঠে যাচ্ছিল। তখন তিনি সেগুলো আদর করছিলেন এবং মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছিলেন।

পাঁচতারা হোটেলের একজন রিসেপশনিস্ট ছিলেন খায়ের

পাঁচতারা হোটেলের একজন রিসেপশনিস্ট ছিলেন খায়ের

৭২ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর খায়ের খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসেন। গড়েন এক অভিনব রেকর্ড। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রকাশকরা খাইরকে লিখেছিলেন যে, তিনি প্রতিদিন কেবিনের বাইরে আধা ঘন্টা সময় নিয়ে গেলেও তিনি বিশ্ব রেকর্ড প্রতিষ্ঠা করবেন, তবে খায়ের তা করতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত স্নায়ামারির ৯০০ পয়েন্টের বিপরীতে তিনি ১,৫১২ পয়েন্টে উঁচুতে রয়েছেন। তার প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি তৈরি করেন সাপের পার্ক এবং একটি গবেষণা কেন্দ্র। এই রেকর্ড করতে তার বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল। পরে অবশ্য তার বিয়ে হয়েছিল।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.