271447

রহস্যময় এসব জাহাজ সমুদ্রে হয়েছে উধাও, কখনো ডুবেছে আবার পুড়েছে

পৃথিবীতে প্রায় সব স্থানেই রহস্যপূর্ণ ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে। তবে জেনে অবাক হবেন সমুদ্রের সবচেয়ে বেশি রহস্যপূর্ণ ঘটনা ঘটে থাকে।

একবার এক জাহাজকে সমুদ্রের বুকে চলতে দেখা যায়, কোনো রকম চালক যাত্রী ছাড়াই। এমন ঘটনা অনেকেই নিশ্চয় শুনেছেন। সমুদ্রে এমন এমন ঘটনা ঘটে থাকে যা কল্পনার বাইরে মনে হতে পারে। আজ আমরা জানবো সমুদ্রের এমন কয়েকটি রহস্যপূর্ণ জাহাজের ঘটনা সম্পর্কে-

পেরাস্মিয়ান অয়েল ট্যাংকার

এটা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় তেল বহনকারী জাহাজ এর মধ্যে একটি। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ ফুট। এতো বড় একটা জাহাজ হারিয়ে যাওয়া কোনো ছোট ঘটনা হতে পারে না। তবে ২০১৮ সালের আগস্টে কেবোনের কাছে ঠিক এমন ঘটনা ঘটেছিলো।

জাহাজ কর্তা জানায়, এই জাহাজ হারিয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে এই জাহাজের ১৯ জন ক্রু এর জীবন বিপন্ন হয়েছিলো। যেখানে এই জাহাজটি হারিয়ে গিয়েছিলো, সেই স্থানটি গল্ফ অব গেই নামে প্রসিদ্ধ। জাহাজ লুট এবং অপহরণ নিয়ে এই স্থানটির সর্বোচ্চ বদনাম রয়েছে।

পেরাস্মিয়ান অয়েল ট্যাংকার

পেরাস্মিয়ান অয়েল ট্যাংকার

পেনামিয়ান অয়েল ট্যাংকারের কোনো খোঁজখবরই পাওয়া যাচ্ছিল না। পুরোপুরিভাবে জাহাজটির কোনো চিহ্ন ছিল না। তবে অবাক করা কথা হলো, ঠিক নয়দিন পরেই জাহাজ চালক ছাড়াই তার গন্তব্যে আবার ফিরে আসে। তবে জাহাজটি গন্তব্যে পৌঁছানোর পরই চারদিকে প্রশ্ন উত্থাপিত হতে থাকে।

এই নয়দিন জাহাজটি কোথায় ছিলো। এই জাহাজের চালক কোথায় এবং ক্রু মেম্বারাই বা কোথায় হারিয়ে গিয়েছে। এসব প্রশ্ন উঠতেই থাকে। তবে আজ পর্যন্ত এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

নিউক্লিয়ার সাবমেরিন হামলা

নিউক্লিয়ার সাবমেরিন হামলা

নিউক্লিয়ার সাবমেরিন হামলা

নিউক্লিয়ার সাবমেরিনকে ভয়ানক হামলা করার জন্যই তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে যদি এই সাবমেরিনেই আগুন লেগে যায় তাহলে আশপাশের কয়েকটি দেশের ভয়ানক বিপদ ডেকে আনার জন্য এটি একাই সক্ষম। আর যদি এই ভয়ানক আগুন পানিতে লাগে তবে এটার প্রভাব খুব বেশি পড়বে না। তবে যদি কোনো স্থলে আগুন লেগে যায়।

কে-ফিফটি ফোর

রাশিয়ার এক সাবমেরিন। যার নাম কে-ফিফটি ফোর। এই সাবমেরিনকে মেরামতের জন্য পানি থেকে তুলে এনে স্থলে মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। তবে এক ইঞ্জিনিয়ারের ভুলের কারণে এতে হঠাৎ করেই আগুন লেগে যায়।

এটা নেভানো খুবই বিপজ্জনক ছিল। এই সাবমেরিন প্রায় সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিলো। ভাগ্য ভালো ছিলো এই সাবমেরিনে নিউক্লিয়ার ব্যারেলগুলো লিক হয়ে বিস্ফোরণ ঘটেছিল না। যদি এটা লিক হয়ে বিস্ফোরণ ঘটতো।

কে-ফিফটি ফোর

কে-ফিফটি ফোর

তবে রাশিয়াকে চেরনোবিলের চেয়ে ভয়ানক বিপর্যয় হতে পারতো। এই সাবমেরিনকে পুনরায় আবার ঠিক করতে পুরো ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়।  তিন বছর পর আবার এই সাবমেরিনকে কাজে ব্যবহার করা হয়।

ফ্লাক্সি লোড বেইজি

দুই লাখ ৮৬ হাজার টন ওজন, এক হাজার ফুট লম্বা, যার নাম ফ্লাক্সিলোড আইডি। জাহাজটি তৈরি করার সময় সবাই ভেবেছিলো এতো বিশাল জাহাজ কীভাবে সমুদ্রের ভাসবে। এটা খুব সুনিপুণভাবে বানানো হয়েছিলো। ফলে এটা অনেক সহজেই সমুদ্রে ভাসতে শুরু করে।

কীভাবে এই জাহাজ পানিতে ভাসবে, এটা এই জাহাজের রহস্য নয় বরং কীভাবে এই জাহাজ কোনো রকম ঝড় বা কোনো কিছুর আঘাত ছাড়াই পানিতে ডুবে যেতে পারে এটাই জাহাজের রহস্য।

ফ্লাক্সি লোড বেইজি

ফ্লাক্সি লোড বেইজি

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে চায়না থেকে ব্রাজিলের উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে মাঝপথেই এই জাহাজ কোনোরকম সংকেত না দিয়েই কোনো ঝড়ের কবলে না পড়ে এবং কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে একেবারে হঠাৎ করে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে ডুবে যায়।

এই জাহাজে থাকা পুরো ৩০০০ টন তেল সমুদ্রের পানিতে মিশে যায়। এই জাহাজে থাকা সব যাত্রীদের মধ্যে দুই জন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যায়। তারাই পরবর্তীতে লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়। সবার মনে একই প্রশ্ন, এতো বড় জাহাজ কীভাবে কোনো কিছুর সঙ্গে না ধাক্কা খেয়ে এমনিতেই পানিতে ডুবে যেতে পারে। তাও আবার খুবই অল্প সময়ের মধ্যে।

রিও জাহাজ

রিও জাহাজ

রিও জাহাজ

রিও নামক একটি জাহাজ যখন সমুদ্রের একটি দ্বীপে আটকে যায়, তখন থেকেই ঘটতে থাকে আজব সব ঘটনা। ১৮৪০ সালের ১২ ডিসেম্বর মস্কোতে আটকে যায় রাশিয়ার এই জাহাজটি। যদিও এতে থাকা ৩১ জন নাবিক পুরোপুরিভাবে সুরক্ষিত থাকে। তবে একটি দেশের জাহাজ আরেকটি দেশে গিয়ে আটকে পড়ে, এতে বাঁধে নানারকম বিপত্তি।

এই জাহাজের মালিকের তেমন অর্থ ছিল না, যে এই জাহাজকে মুক্ত করে আবার পানিতে ভাসাবে। তাছাড়া এই দেশের সরকার অন্য দেশের জাহাজের পেছনে অর্থ ব্যয় করতে সম্মত ছিল না। এর ফলে ওই জাহাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে আজ পর্যন্ত ওইভাবেই ওখানেই আটকে আছে। বিভিন্ন দেশের পর্যটক আসে ওই জাহাজকে দেখতে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.