267864

রহস্যময় কাণ্ড! মুখে ইট ঢুকিয়ে সমাধি দেয়া হয় এই নারীকে

সারা বিশ্বে অনেক নৃবিজ্ঞানী রয়েছেন, যারা পৃথিবীর অতীত সভ্যতা খুঁজতে ব্যস্ত। হারিয়ে যাওয়া নানা সভ্যতার কাহিনী প্রতিনিয়ত সন্ধান করেই চলেছেন তারা। বর্তমানকে অতীত সম্পর্কে জানাতেই তাদের এই প্রয়াস।

আদিকাল থেকেই সভ্যতার বিবর্তনের হাত ধরে আমরা বর্তমানে এসে পৌঁছেছি। এখনো পর্যন্ত প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিভিন্ন শতাব্দীর বহু পুরনো সভ্যতার খোঁজ পেয়েছেন। অনেক সমাধি, স্থাপত্য, মিনার, ব্যবহার্য জিনিসপত্র খুঁজে পেয়েছেন তারা। যা জানান দেয় বিভিন্ন যুগের মানুষের জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে।

কঙ্কালটি দেখে রীতিমত চমকে যান গবেষকরা

কঙ্কালটি দেখে রীতিমত চমকে যান গবেষকরা

পোল্যান্ডের কয়েকজন প্রত্নতাত্ত্বিক জার্মানির গ্লুইস প্রদেশের পোলিশ শহরে খনন কাজ চালাচ্ছিলেন। সেসময় সেখানে রাস্তা তৈরির কাজ চলছিল। রাস্তার কাজ করার সময় শ্রমিকরা একটি সমাধি খুঁজে পায়। সেখানে একটি কঙ্কাল দেখে একটু ভয়ই পেয়ে যায় তারা। তবে প্রত্নতাত্ত্বিকরা এটি জানতে পেরে তাদের মতো করে এই সমাধিটির খননকাজ চালায়।

অতঃপর বেরিয়ে আসে এক কঙ্কাল। যার মুখের ভেতর একটি আস্ত ইট ঢুকানো ছিল। এই জায়গায় এর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈন্যদের সমাধি পেয়েছিলেন তারা। তাদের সমাধিতে অবশ্য শরীর থেকে মস্তক আলাদা করা ছিল।ধারণা করা হয় সৈন্যদের মাথা কেটে হত্যা করা হয়েছিল। তবে মুখে ইট নেয়া এই কঙ্কালটি পেয়ে রীতিমত কৌতূহলী হয়ে ওঠেন গবেষকরা।

কঙ্কালটি উদ্ধার করে এর পরীক্ষা করা হয়

কঙ্কালটি উদ্ধার করে এর পরীক্ষা করা হয়

কঙ্কালটির কার্বনডেটিং থেকে জানা যায়, এটি একটি নারীর কঙ্কাল। যার মুখের ভেতর একটি আস্ত ইট ঢুকিয়ে তাকে সমাধি দেয়া হয়েছিল। সেসময় এটি কুসংস্কার ছিল বলে ধারণা করেন গবেষক দল। মুখের ভেতর ইট থাকলে পাপ কাটা যাবে মৃত ব্যক্তির এমনই হয়ত ধারণা ছিল সেখানকার মানুষের।

আবার এটি ষোড়শ শতাব্দীর দিকের সমাধি বলে মনে করা হচ্ছে। সেসময়কার অনেক সমাধিতে নাকি গবেষকরা কঙ্কালের মুখের ভেতর ইট পেয়েছেন। এতে মনে করা হয় সেই সময়টা ছিল প্লেগের প্রাদুর্ভাব। যারা প্লেগে মারা গিয়েছিল মনে করা হত তাদের আত্মা আবার ফিরে এসে অন্যদের ক্ষতি করবে।

নারীর কঙ্কাল এটি

নারীর কঙ্কাল এটি

যাতে আত্মা ফিরে এসে অন্য কাউকে আক্রমণ করতে না পারে তাই মুখের ভেতর ইট দিয়ে বাঁধা দেয়া হত। তবে এর পক্ষে কোনো যুক্তিই তেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাই প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করছেন মৃতদেহটি বছরের পর বছর ধরে মাটির নিচে থাকতে থাকতে এর ভেতরে কোনোভাবে ঢুকে গেছে।

এর আগে ২০১২ সালে বুলগেরিয়ায় প্রত্নতাত্ত্বিকরা দুটি মানব কঙ্কাল পেয়েছিলেন। যাদের মুখের ভেতর রড ঢোকানো ছিল। বিভিন্ন সভ্যতায় এমন আরো অনেক অদ্ভূত জিনিস পাওয়া যায়। যা সেসময়কার বিভিন্ন নিদর্শন, আচার-ব্যবহারকে নির্দেশ করে।

এখনো কঙ্কালটি নিয়ে বিস্তর গবেষণা চালাচ্ছেন গবেষকরা

এখনো কঙ্কালটি নিয়ে বিস্তর গবেষণা চালাচ্ছেন গবেষকরা

অনেক জায়গায় মানুষের সঙ্গে গয়না, বোতাম, দামী পোশাক, অস্ত্র সমাধি দেয়া হতো। অনেককে তো তাদের প্রিয় পোষা প্রাণীর সঙ্গেও সমাহিত করা হয়েছে। যার অনেক কিছুরই সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এসব প্রাচীন নিদর্শন থেকে আমরা সেসময়কার সম্পর্কে ধারণা পাই। তারপরও এখনো প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই বিষয়ে তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্র: লাইভসাইন্স

পাঠকের মতামত

Comments are closed.