267862

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধবিমান নকশায় ভূমিকা রেখেছিল যে কিশোরী!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ারফোর্স এবং নাৎসি জার্মানির বিমান বাহিনীর মধ্যে আকাশে একটি যুদ্ধ হয়েছিলো। যা ব্যাটেল অফ ব্রিটেন নামে পরিচিত। এই বছরের ১০ই জুলাই ব্যাটেল অফ ব্রিটেন শুরু হওয়ার ৮০ বছর পূর্তি হলো। ১৯৪০ সালের অক্টোবরে ব্রিটেন ওই যুদ্ধে জয়লাভ করেছিল। অবশেষে হামলাকারী নাৎসী বিমানগুলোকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয় হিটলার।

এই যুদ্ধে বিজয়ের জন্য ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী নির্ভর করেছিল অসাধারণ নকশার যুদ্ধবিমানগুলোর ওপরে। আর তার অন্যতম স্পিটফায়ার যুদ্ধবিমানের নকশায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলে কিশোরী এক স্কুল ছাত্রী। যিনি ছিলেন যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ১৩ বছরের এক বালিকা। তার নাম ছিল হ্যাজেল হিল।

হ্যাজেল হিল

হ্যাজেল হিল

হ্যাজেলের পিতা ফ্রেড হিল তৎকালীন বিমান মন্ত্রণালয়ে চাকরি করতেন। রাজকীয় বিমান বাহিনীর সব ধরণের কর্মকাণ্ড তদারকি করতো এই মন্ত্রণালয়। সেই সময় রাজকীয় বিমান বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য নানা ধরণের বিমান তৈরি করা হচ্ছিলো, তার একটি ছিল ‘স্পিটফায়ার’ যুদ্ধবিমান।

প্রথমদিকের বিমানগুলো শত্রু বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য ততোটা কার্যকর ছিল না। পরবর্তীতে সেই বিমানের উন্নত নতুন সংস্করণ তৈরি করা হয়। সেসব সংস্কারের অন্যতম ছিল যে, বিমানে কতগুলো আগ্নেয়াস্ত্র সংযুক্ত করা হবে।

প্রথমে পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে, বিমানে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র থাকবে। তবে হ্যাজেলের পিতা ফ্রেড হিল ভাবলেন, সেখানে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র সংযুক্ত করা উচিত। কিন্তু ঠিক কীভাবে বিমানে সেগুলো বিন্যাস করা হবে, অংকের সেই হিসাব তিনি করে উঠতে পারছিলেন না।

পিতা ফ্রেড হিলের সঙ্গে হ্যাজেল হিল

পিতা ফ্রেড হিলের সঙ্গে হ্যাজেল হিল

তখন তিনি বাড়িতে ফিরে গেলেন এবং তার কিশোরী মেয়ে হ্যাজেলকে ডেকে সমস্যাটির সমাধান করতে বললেন। হ্যাজেল অংকে তুখোড় ছিল। তখন অনেকে মনে করতেন, এই যুদ্ধবিমানগুলোয় আটটি করে আগ্নেয়াস্ত্র সংযুক্ত করা হলে বিমানের জন্য সেটা বেশি হয়ে যাবে এবং ওজনের কারণে বিমানগুলো উড়তে পারবে না। কিন্তু হিসাব করে দেখা গেল, ব্রিটিশদের যুদ্ধ জয়ের জন্য সেটা আসলে যথার্থ ছিল। বিমানে বেশি আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কারণে তাদের যে বিশেষ সক্ষমতার দরকার ছিল, তা তারা পেয়ে যাচ্ছে। এই পরিবর্তন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর বিজয়ে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

হ্যাজেলের নাতনি ফেলিসিটি বেকার এ ব্যাপারে বলেন, তার দাদী গল্প করতেন যে তিনি বিমান নিয়ে কাজ করেছিলেন, কিন্তু শুধুমাত্র কিছুদিন আগে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, সেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

পাঠকের মতামত

Comments are closed.