264153

লকডাউনে যেভাবে চলছে সুন্দরীদের রূপচর্চা

ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে প্রস্তুতি পর্বটা আসলে অনেক বড়। মেকআপ শুরু হওয়ার আগেও চলে সেই প্রস্তুতি। ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে হয়, যাতে চড়া আলো বা মেকআপে তা রুক্ষ, প্রাণহীন হয়ে না পড়ে। তার জন্য অনেকে সালঁর উপরে, অনেকে চিকিৎসকের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু গৃহবন্দি জীবনে সে সবের সুযোগ নেই। ভরসা রাখতে হচ্ছে প্রাকৃতিক উপায়ে। টলিউডের সুন্দরীরাও ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপরুটিন বজায় রাখছেন।

অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার বলেন, ‘প্রকৃতির মধ্যেই সব আছে। আগে কখনও সেভাবে দেখিনি। পরিবারের বয়স্কদের কাছ থেকে পাওয়া টোটকা এখন কাজে লাগানোর সময়। সে দিন মায়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। মা বললেন, স্কিন স্ক্রাব করতে ময়দা মাখতেন। আগে এসব করিনি। এখন ভেবে দেখছি। বাড়িতে তৈরি বেসনের মাস্ক ব্যবহার করছি। চুলে ডিম খুব ভালো কাজে দেয়। একটু দুধও হাতে নিয়ে মুখে মেখে নিই। আর চুলে তেল আমি আগেও লাগাতাম, এখনও মাখছি। সপ্তাহে দুদিন করে তেল মাখাটা চালিয়ে যাচ্ছি।’

দুই বাংলা অন্যতম সেরা সুন্দরী নায়িকা জয়া আহসানও একই পদ্ধতিতে নিজের ত্বকের পরিচর্যা করছেন। প্রকৃতি ঠিক যেভাবে নিজেকে রেস্টোর করছে, তিনিও সেভাবেই নিজের ত্বক ও চুল রেস্টোর করতে চান। জয়া বলেন, ‘ছোটবেলায় আমার নানি রোজ চপচপে করে তেল মাখিয়ে দিতেন চুলে। এখন সেভাবেই তেল মেখে থাকছি। তাছাড়া রোজ সকালে নিম পাতা, হলুদ ও মধু খাই আমি। তার একটু পরে অ্যাপল সিডার ভিনিগার ও আদা খাই। আমার মনে হয়, বাইরে থেকে কিছু মাখার চেয়ে খেলে বেশি কাজে দেয়। আমাদের বাড়িতে একটা চকলেট মিন্ট গাছ আছে। রোজ সকালে ওই চকলেট মিন্ট পানিতে দিয়ে খাই। তাতেই পুরো রিফ্রেশ লাগে ভেতর থেকে।’ তবে বাড়িতে আছেন বলে ডে ক্রিম, নাইট ক্রিম কিছুই মাখছেন না। ত্বককে বিশ্রাম দিচ্ছেন কয়েকটা দিন।

ঋতাভরী চক্রবর্তীরও একই মত। ত্বকে তেমন কিছু করতে হচ্ছে না। বেরোতে হচ্ছে না বলে মাঝেমাঝে হট অয়েল মাসাজ চলছে চুলে। তার কথায়, ‘আমন্ড, ক্যাস্টর আর কোকোনাট অয়েল মিশিয়ে মাথায় মাখছি। তবে তেল মেখে শুতে পারি না। শ্যাম্পু করে নিই। আর আমার চুলগুলো স্ট্রেট করেছিলাম। এখন আবার আগের মতো ওয়েভি হয়ে গেছে। সেই পুরনো দিনে ফিরে গেছি মনে হচ্ছে। আর ত্বকের জন্য রান্না করতে করতে হাতের কাছে যা পাই, মেখে নিই। কখনও হয়তো রান্নায় টক দই দিয়ে কিছুটা মুখে মেখে নিলাম। একদিন ডিম মাখলাম চুলে। আর এখন রোজ সকালে কাঁচা রসুন খাচ্ছি।’

রান্নাঘরে কাজ করতে করতে ফল বা টমেটোর এক টুকরো মুখে ঘষে নেন সোহিনী সরকারও। আর চুলের যত্ন নিচ্ছেন কী ভাবে? তার কথায়, ‘আগে রোজই বেরোতে হত। পলিউশনের জন্য একটু তেল থাকলেই চুল চিটচিটে হয়ে যেত। এখন দূষণ কমে গেছে। তার উপরে বাড়িতেই বসে আছি। তাই সরষের তেল মাখছি। আমলকি দিয়ে তেল রোদে দেয়া থাকে। সেই তেলই চুলে মাখছি। এক দিন চুলে ডিমও লাগিয়েছিলাম। আর বাড়িতে কিছু ফেসমাস্ক কেনাই ছিল। সময়ের অভাবে তা লাগানো হয়নি। সেগুলোর এক্সপায়ারি ডেটও এগিয়ে আসছে। তাই ব্যবহার করে নিচ্ছি।’

তবে বেশ সমস্যায় পড়েছেন ইশা সাহা। ইশার ত্বক স্পর্শকাতর। তাই মেডিকেটেড প্রডাক্টের উপরেই ভরসা করতে হয় তাকে। এখন সেসব কিছুই পাচ্ছেন না। ইশা বলেন, ‘আমার ত্বকে সব কিছু ব্যবহার করতে পারি না। তাছাড়া আমার মুখে ডার্ক স্পট পড়ছিল বলে কয়েকদিন হল তার ট্রিটমেন্ট শুরু করেছিলাম। সেটাও এখন বন্ধ। চুলও পড়ছিল। তবে এখন দেখছি চুল লম্বা হচ্ছে।’

ঘরোয়া রূপরুটিন তো না হয় হল। কিন্তু আই ব্রো প্লাক, ওয়্যাক্সিং, ম্যানিকিয়োর- এসব কীভাবে করছেন তাঁরা? জয়ার কথায়, ‘ভুরু প্লাক না করেই বেশ ভালো লাগছে। প্লাক না করা ভুরুতে ইনোসেন্ট দেখায়। আমার আবার সেটা খুব ভালো লাগে। তবে ধৈর্য ধরে নখ বড় করেছিলাম। হাইজিন বজায় রাখার জন্য কচকচ করে নখগুলো কেটে ফেলেছি। প্রথম প্রথম কষ্ট হচ্ছিল। এখন আর কিছু মনে হচ্ছে না।’

সোহিনীও ভুরু প্লাক করেন না। প্রিয়াঙ্কা অবশ্য অনেক ঘরোয়া টোটকা পাচ্ছেন, কিন্তু কোনটা প্রয়োগ করবেন, সেটা নিয়ে চিন্তিত। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘অনেক হোমমেড ওয়্যাক্সিংয়ের ভিডিও দেখছি। তবে নিজের উপরে প্রয়োগ করার ভরসা পাচ্ছি না। তাই আপাতত যেমন আছি, ঠিক আছে। সব স্বাভাবিক হলে সালঁয় গিয়েই যা করার করব।’

সূত্র ঢাকা টাইমস

পাঠকের মতামত

Comments are closed.