225792

রুপকথা লিখে আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুল

ডেস্ক রিপোর্ট : টানা তিন বছর শত্রুদল যে শিরোপা নিয়ে উল্লাস করতে করতে দেশে ফিরেছিল এবার সেই শিরোপা নিজেরা ঘরের তোলার স্বপ্ন দেখছিল বার্সেলোনা। ট্রেবল জয়ের স্বপ্নে বিভোর কাতালানরা অবশ্য ভুল কিছু করছিলো না। কেননা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলের বিশাল জয়ে এগিয়ে ছিল মেসিরা। কিন্তু কে জানতো এই গল্পের শেষটাও বিষাদময় হবে কাতালান শিবিরের জন্য!

২০১৫ সালের পর আর কখনো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পারেনি বার্সেলোনা। এই তিন মৌসুমেই শিরোপা দিয়ে ড্রেসিংরুম সাজিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেই রিয়াল মাদ্রিদ এবার শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিয়েছে। কিন্তু সেমিতে এসে এভাবে বার্সেলোনাও যে বিদায় নিবে তা ঘুনাক্ষরেও ভাবেনি।

ভাববেই বা কেন? প্রথম লেগে ঘরে মাঠে ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে অ্যানফিল্ডে গিয়েছিল ভালভার্দের শিষ্যরা। সেখানে আবার দ্য রেডসদের দুই শক্তিশালী অস্ত্র অনুপস্থিত। এ যেন সোনায় সোহাগা! কিন্তু ম্যাচ শুরুর পরই যেন পাল্টে গেলো দৃশ্যপট। সালাহ-ফিরমিনোকে ছাড়াই উন্মাদের মতো জ্বলে উঠতে শুরু করেছিল ক্লপের শিষ্যরা।

মঙ্গলবার রাতে কিক অফের ৭ মিনিটের মাথায় গোল করে সেটাই যেন বুঝিয়ে দিলেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড ডিভোচ অরিগি। শাকিরির আলতো শট স্টেগান যখন হাতে নিতে পারলেন না সেটা সহজেই জালে ঢুকিয়ে দিলেন অরিগি। ব্যস! শুরু হলো উল্লাস। যে উল্লাস থামেনি এখন পর্যন্ত।

প্রথমার্ধ পর্যন্ত ১-০ গোলই ছিল রেডসদের সম্বল। কিন্তু ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেই অগ্নিমূর্তি রূপ ধারণ করে দ্য রেডসরা। উইনালডমের জোড়া গোলের সঙ্গে বিরতির পর আরও একটি গোল করেন প্রথম গোলদাতা অরিগি। এ দুজনের জোড়া গোলেই ম্যাচের পার্থক্য নির্ণয় হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে নিজেদের নাম টুকে নিলো ইয়ুর্গেন ক্লপরা। শেষ গোলটা তো ছিল রীতিমত বিস্ময়কর। কর্নার কিক থেকে আলেক্সান্ডারের বুদ্ধিদীপ্ত শট জালে জড়াতে কোন রকম ভুল করেননি অরিগি। এই গোলের পর অ্যানফিল্ডে ছড়িয়ে পড়েছিল উৎসবের বন্যা।

এই ম্যচে মাত্র ১ গোল লিভারপুলের জালে জড়াতে পারলেই অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে ফাইনালের টিকিট পেতো কাতালানরা। কিন্তু অ্যালিসনের বিশ্বস্ত গ্লাভসকে একবারও বল ফাঁকি দেওয়াতে পারেননি মেসি-সুয়ারেজরা। ফলে এ বছরেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ক্যাম্প ন্যু’য়ের সেনাবাহিনীদের।

ম্যাচ শেষে অ্যানফিল্ডে যে আনন্দের বন্যা দেখা গেছে তা হয়তো দেশ স্বাধীনের আনন্দকেও ছাড়িয়ে গেছে। কেননা ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বার্সেলোনার মতো দলের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া অনেকটা আকাশের চাঁদ ছোঁয়ার মতো। সেটা যখন করে দেখানো সম্ভব হয়েছে তখন উল্লাসের মাত্রাটা একটু বুনো হবে এটাই স্বাভাবিক।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.