207145

আসলেই অকৃতজ্ঞ ভারত! এখনো অভিযোগ করছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে

ডেস্ক রিপোর্ট : পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়া ভারতের বৈমানিক অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে পাকিস্তান। তবে তাঁর ধরা পড়ার বিষয়টি নিয়ে ভারতের অভিযোগ-আপত্তি থামেনি। তাঁকে ফেরত দেওয়ার সময় পাকিস্তান প্রচারের জন্য ভিডিও ধারণ করেছে বলে অভিযোগ ভারতের। একই সঙ্গে অভিনন্দনের বিমান ভূপাতিত করতে পাকিস্তান এফ-১৬ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত।

ভারতের বৈমানিকের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র কেবল জঙ্গি দমনের শর্তে পাকিস্তানকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করতে এফ-১৬ ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। ভারত এফ-১৬ থেকে ছোড়া যায় এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ হাজির করেছে। তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘নালিশ’ করছে। এ ছাড়া ওই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বিস্তারিত জানাচ্ছে।

ভারতের ভাইস এয়ার মার্শাল আরজিকে কাপুর গত বৃহস্পতিবার তিন বাহিনীর এক যৌথ বিবৃতির সময় বলেন, পাকিস্তান অনেক কিছু লুকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এফ-১৬ ব্যবহারের প্রমাণ রয়েছে। এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম আক্রমণের কাজে ব্যবহার করা যায় না।

ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদ পরিচালিত একটি মাদ্রাসার ভবনে ভারতের বিমানবাহিনী হামলা চালিয়ে সফল হয়েছে বলে এখনো জোর দাবি করছে ভারত। সোমবার দিবাগত রাতে চালানো ওই হামলার চারটি ভবনকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। ভারতের সরকারি সূত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছে।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, কারিগরি বিষয়ে বিস্তারিত গোয়েন্দা তথ্য ও ভূমি থেকে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের স্বল্পতার কারণে কতজন জঙ্গি মারা গেছে তা পুরোপুরি অনুমাননির্ভর। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডার (এসএআর) আকারে ছবি থাকতে পারে। ওই লক্ষ্যবস্তুতে পাঁচটি এস-২০০০ প্রিসিশন গাইডেড মিউনিশন (পিজিএম) দিয়ে আঘাত হানা হয়। যা ভারতীয় বিমানবাহিনীর মিরেজ ২০০০ যুদ্ধবিমানে করে বহন করা হয়।

পাকিস্তান অবশ্য বলছে, ভারতের বিমান ওই এলাকায় আঘাত এনেছে ঠিকই, কিন্তু সেখানে কোনো জঙ্গি ঘাঁটি নেই। তা ছাড়া এ হামলায় কোনো ক্ষতিও হয়নি।

ভারতের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, পাকিস্তান ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করছে না। পাকিস্তান কেন ওই মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে? কেন সেখানে সাংবাদিকদের নেওয়া হচ্ছে না। এসএআর ছবি দেখে সেখানে সফল হামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেখানে একটি ভবন অতিথিশালা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেখানে জইশ-ই-মুহাম্মদের নেতা মাসুদ আজহারের ভাই থাকবেন। এল আকৃতির ওই ভবনে জঙ্গি প্রশিক্ষণদাতারা এসে থাকতেন।

এখন ওই ছবি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে কি না, তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিবেচনার বিষয়। কারণ এগুলো ‘ক্লাসিফায়েড’ নথি। তবে ওই সব এসএআর ছবি স্যাটেলাইটের ছবির মতো স্পষ্ট নয়। ভারী মেঘের কারণে স্যাটেলাইটের ছবি পাওয়া যায়নি। ওই ছবি পাওয়া গেলে এ বিতর্ক উঠত না। নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই হামলা চালানো হয়।

ইতিমধ্যে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওই এলাকা ঘুরে এসেছেন। সেখানে চারটি বড় গর্ত দেখেছেন। এ ছাড়া ১৫টি পাইনগাছের ক্ষতি হতে দেখেছেন। এতে ইসরায়েলের তৈরি বোমা ব্যবহার করেছে ভারত। এতে ভবন ধ্বংসের চেয়ে এর ক্ষয়ক্ষতি করে বেশি। এটি নিখুঁত ও জ্যামাররোধী বোমা, যা ভারী মেঘ থাকলেও কাজ করে। এটি দেরিতে ফাটে বলে ক্ষতি বেশি হয়।

ওই ভবনের ছাদ লোহার পাত দিয়ে তৈরি। কিন্তু বোমা পড়ার পর তা হাওয়া হয়ে যায়। কিন্তু দুই দিনের মধ্যেই ওই ছাদ আবার তৈরি করা হয়েছে বলে সেখানকার পুরো ক্ষয়ক্ষতি অনুমান করা যাচ্ছে না। ওই মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে থাকায় কোনো নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য বা জঙ্গিদের নিহত হওয়ার বিষয়টিও অনুমাননির্ভর হয়ে পড়েছে। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জিনিউজ, এনডিটিভি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.