207142

একটুর জন্য লজ্জার রেকর্ড থেকে রেহাই পেলেন মিরাজ!

ডেস্ক রিপোর্ট : টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড হলো। কিউইদের ৪৩২ টেস্টের ইতিহাসে এই প্রথম সাত শর বেশি রান। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে শারজায় ৬৯০ রানকে পেছনে ফেলে নিউজিল্যান্ডের টেস্ট সর্বোচ্চ এখন ৬ উইকেটে ৭১৫। কেন উইলিয়ামসন চাইলেই যেটি আরও বড় হতে পারত। নিজের ডাবল সেঞ্চুরি হওয়ার পরই ইনিংস ঘোষণা করায় তা আর হয়নি। আরেকটি রেকর্ড তাই হতে হতে হলো না। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে দু্বার সাত শর বেশি রান করেছে। দুটিই বাংলাদেশ সফরে। এর মধ্যে ২০১৪ সালে মিরপুরে ৬ উইকেটে ৭৩০ রান করার পর ডিক্লেয়ার করে দেওয়া ইনিংসটিই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড হয়ে আছে।

আজ হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে যা হলো, সেটি রানবন্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। আদর্শ ব্যাটিং উইকেটে ব্যাটসম্যানরা স্বচ্ছন্দে খেলে গেলেন আর মাথা কুটে মরলেন বোলাররা। প্রথম ইনিংসে এই উইকেট কাজে লাগাতে না পারার দুঃখটা তাই আরও বেড়ে গেল বাংলাদেশের। এদিন অবশ্য মাঠে সবচেয়ে দুঃখী মানুষটি কোনো ব্যাটসম্যান নন। তিনি বাংলাদেশের অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
অগৌরবের একটা রেকর্ড যে সঙ্গী হয়ে গেল তাঁর। উইকেট পেয়েছেন ২টি। তবে তার জন্য মূল্য দিতে হয়েছে অনেক। রানের হিসাবে বললে ২৪৬ রান! ৪৯ ওভারে এই রান দিয়ে বাংলাদেশের কোনো বোলারের এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ডটি এখন তাঁর। এই টেস্টে সুযোগ না পাওয়াটাকে এখন আশীর্বাদ মনে করতেই পারেন তাইজুল ইসলাম। এত দিন অগৌরবের এই রেকর্ডটা ছিল এই বাঁহাতি স্পিনারের। সেটি বেশি দিন আগের কথা নয়। গত বছর জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেবার শ্রীলঙ্কা করেছিল ৭১৩ রান। তাইজুল ৬৭.৩ ওভার বোলিং করে দিয়েছিলেন ২১৯ রান। এর চেয়ে প্রায় ১৮.৩ ওভার কম বোলিং করেই রান দেওয়ায় তাইজুলকে ছাড়িয়ে গেলেন মিরাজ।

টেস্ট ইতিহাস বিবেচনায় নিলে ছাড়িয়ে গেলেন আরও অনেককেই। এক ইনিংসে সবচেয়ে রান দেওয়ার সর্বকালীন রেকর্ডে মিরাজের নাম এখন ছয় নম্বরে। ওপরে আছেন যে পাঁচজন, তাঁরা সবাই মিরাজের চেয়ে বেশি ওভার বোলিং করেছেন। এক নম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি চায়নাম্যান বোলার স্পিনার চাক ফ্লিটউড-স্মিথ। ফ্লিটউড-স্মিথের এই দুঃস্বপ্ন ১৯৩৮ সালে ওভালে। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো নয় শ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই ইনিংসটির সময়ই ফ্লিটউড-স্মিথের এই রেকর্ড। যেটিকে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের টেস্ট ব্যাটিং গড়ের রেকর্ডের মতোই অবিনশ্বর মনে হওয়া স্বাভাবিক। সেই ইনিংসে মাত্র ২ রানের জন্যই ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’ হয়নি ফ্লিটউড-স্মিথের। রান দেওয়ার ট্রিপল সেঞ্চুরি আর কি! ৮৭ ওভারে দিয়েছিলেন ২৯৮ রান। বিনিময়ে একটি মাত্র উইকেট। সেটি অবশ্য দামি উইকেটই ছিল। ওয়ালি হ্যামন্ডের। তাই বলে এত দামি তো আর নয়। এমন হীরার দামে আর কোনো উইকেট কেনা হয়নি টেস্ট ইতিহাসে।

ওভালে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ওয়ালি হ্যামন্ড যেমন সাত শ-আট শ রান হয়ে যাওয়ার পরও দলকে ব্যাট করে যেতে বলেছিলেন, এখানে কেন উইলিয়ামসনও তা করলে ফ্লিটউড-স্মিথের রেকর্ডটা হুমকির মুখেই পড়ত। মিরাজের ওভার প্রতি রানের যে হিসাব, তাতে খুব বেশিক্ষণ লাগত না সেই রেকর্ড ভাঙতে। ওভার প্রতি মিরাজ দিয়েছেন ৫.০২ রান। এটি ধরে হিসাব করলে ফ্লিটউড-স্মিথের সমান ৮৭ ওভার বোলিং করলে তা থেকে রান উঠত ৪৩৭-এর মতো!

পাঠকের মতামত

Comments are closed.