182584

সৌদি-ট্রাম্প সম্পর্ক: তিক্ততা দিয়ে শুরু, বন্ধুত্বে শেষ

নূসরাত জাহান: যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরেবের সম্পর্ক নতুন কিছু নয়। এক শতকেরও বেশি সময় ধরে তেল সমৃদ্ধ এ দেশটির সঙ্গে মার্কিনিদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ‘তেল’ কে কেন্দ্র করে মূলত এ সম্পর্কের সূত্রপাত্র। কারণ সৌদি সরকার তেল বিক্রির সব টাকাই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে রাখে। আবার মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সৌদি আরবই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পথ। অর্থনৈতিক কারণেই হোক আর আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে যে কারণেই হোক সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনেক পুরনো ও মজবুত।

১৯৩৩ সালে সৌদি আরবে তেলের খনির ব্যাপক প্রসার হয়। মূলত তখন থেকেই সৌদি-যুক্তরাষ্ট সম্পর্ক। তখন থেকেই দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে তা আরও মজবুত হতে থাকে। সৌদি আরবই যুরাষ্ট্রের তৈরি করা অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের সবচেয় বড় ক্রেতা। এছাড়া এখানে দীর্ঘ দিন থেকেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি।

সম্প্রতি নিজ স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করছে। কারণ সৌদিকে হাতে রাখতে পারলেই মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের আধিপত্য ঠিকমতো টিকিয়ে রাখতে পারবে। বিশেষ করে ইরানকে বাগে আনতে চায় তারা। কারণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতেই বহুদিন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বশ্যতা স্বীকার করাতে চেয়েছে। কিন্তু পারেনি। এ নিয়ে তাার ইরাক-ইরান যুদ্ধও বাধিয়েছে। ইরানকে বাগে না আনতে পারলেও মরণাস্ত্র আছে এই অজুহাতে ইরাককে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সৌদি আরব অবশ্যই আরব বিশ্বের দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখারা ব্যাপারে সব সময় ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে। এ কারণেই দুই পক্ষের সঙ্গেই তাদের সম্পর্ক ঠিক আছে।

ওবামার আমলের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি সম্পর্কের টানাপড়েন দেখা দেয়। ওয়াশিংটন চাইছিল, ইরান ইস্যুতে রিয়াদ যুক্ত হোক। এতে তাদের আপিত্তি ছিল। এছাড়া ইয়েমের গৃহযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ গ্রহণ করা নিয়ে তাদের ব্যাপক সমালোচনা করেছিল সৌদি। এ নিয়েই খানিকটা উত্তেজনা দেখা দিয়েছেল।

যাইহোক ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের উষ্ণতা কমতে শুরু করে। আঞ্চলিক ইস্যুতে সৌদির ভূমিকার পূর্ণ সমর্থন করে ট্রাম্প প্রশাসন। যদিও ক্ষমতায় আসার আগে সৌদি সম্পর্কে ট্রাম্পর মনোভাব পুরোটাই বিপরীত ধর্মী ছিল। নির্বাচনি প্রচারের সময় তিনি বলেনছিলেন, তিনি সৌদি আরবের বড় ভক্ত নন। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ‘সৌদি জঙ্গিদের’ মদদ দেওয়া বন্ধ করা। তবে ক্ষমতায় আসার পর সুর পাল্টেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বিদেশ সফর করছেন সৌদি আরবেই। আগামীতে এ সম্পর্ক আরো মজবুত হবে তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌদি আর যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: আল-জাজিরা।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.