কোন পথে আনন্দবাজারের ভবিষ্যত?
সজল সরকার : ভারতের কলকাতায় ১৯২২ সালে আনন্দবাজার পত্রিকা সান্ধ্যকালীন সংস্করণ প্রকাশ শুরু করেছিল। ২ পয়সা দামের এ পত্রিকা ১ হাজার কপি বের হত সে সময়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে আনন্দবাজার পত্রিকা। সরকার পরিবার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এ পত্রিকার পাঠক বেড়ে এখন ৬০ লাখেরও বেশি। আনন্দবাজার গ্রুপ থেকে বাংলা পত্রিকা ছাড়াও ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ, ২৪ ঘন্টার খবরের চ্যানেল, প্রকাশনা সংস্থা, মোবাইল কোম্পানি, ইন্টারনেট সেবাদান কোম্পনিসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। তবে ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে আনন্দবাজার গ্রুপ (এবিপি) অর্থনৈতিক সঙ্কটের আভাস দিয়ে আসছিল। নম্র স্বভাব হিসাবে পরিচিত এবিপি গ্রুপের পরিচালনা পর্ষদ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মী ছাটাইয়ের ঘোষণা দেয়। গ্রুপে কর্মরত জ্যোষ্ঠ্য কর্মীদের মধ্যে ৪০ শতাংশই ছাটাই করা হয়েছে। বর্তমানে ৩শ কর্মী বেশ কষ্ট করে সব কাজ চালিয়ে নিচ্ছে।
এবিপি হোল্ডিং প্রাইভেট লিমিটেডের কয়েকটি উদ্যোগের মধ্যে বিজনেস মিডিয়া প্রাইভেট লিঃ, আনন্দ অফসেট লিঃ, টেলিগ্রাফ পাবলিকেশনস লিঃ, নব মুদ্রণ প্রাইভেট লিঃ, কলকাতা মিডিয়া ইন্সটিটিউট অন্যতম। এসব কোম্পানির সবগুলোই আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে আনন্দবাজার পত্রিকা পশ্চিমবঙ্গে বেশ ভাল অবস্থায়ই রয়েছে। বতর্মানে এ পত্রিকার সার্কুলেশন ১১.১৯ লাখ যেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ‘দৈনিক বর্তমান’ পত্রিকার সার্কুলেশন ৬.৫ লাখ ও সংবাদ প্রতিদিন ২.৬ লাখ। এবিপি গ্রুপের দ্য টেলিগ্রাফ ভারতে ইংরেজি পত্রিকার মধ্যে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে।
গত বছর এবিপি গ্রুপ লাভ করে ৯০.৬ কোটি রুপি যার ৭০ শতাংশই আসে আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে। প্রিন্ট মিডিয়ার তুলনায় টিভি চ্যানেলের প্রসার বেশি বলে এবিপি গ্রুপ সাম্প্রতিককালে কয়েকটি টিভি চ্যানেল খুললেও প্রিন্ট মিডিয়ার লভ্যাংশই এখনও গ্রুপের মূল ভরসা। তবে গ্রুপ ব্যবস্থাপনা আনন্দবাজার পত্রিকার কর্মী ছাটাইয়ের ফলে ভবিষ্যতে এ প্রকাশনা কোন পথে এগুবে তা-ই এখন অনেকের প্রশ্ন।
সূত্রঃ দ্য হুট