177650

উল্টো সুর যুক্তরাষ্ট্রের, আসাদের পদত্যাগেই সিরিয়ায় শান্তি আসবে

নূসরাত জাহান: ২০১১ সালের আরব বসন্তের ছোয়ায় সিরিয়া উত্তাল হয়ে ওঠে। বিক্ষোভের সেই ঢেউ পুরো দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এখনও থামেনি বসন্তের সেই সহিংসতা। সিরিায়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার অবস্থানে অনড়। আবার বিরোধীরা তাদের অবস্থানে অনড়। দুই পক্ষের মাঝে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। পাশপাশি জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়েছে লাখ লাখ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রও আসাদের পক্ষেই এতদিন সাফাই গেয়েছে। এবার তারাই বলছে প্রেসিডেন্ট আসাদ ক্ষমতা না ছাড়লে সিরিয়ার সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের সিরিয়া থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এখন আসাদকে সরাতে হবে। কারণ আসাদকে ক্ষমতায় রেখে সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। নিক্কির এ বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর কথা ভাবছে ওয়াশিংটন। একই সুরে কথা বলছে ব্রিটেনও। তাদের মতে, যে নেতা দেশবাসীকে মারতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেন, তার নেতৃত্ব কোনোভাবেই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।

নিক্কি বলেন, ‘সিরিয়াকে শান্ত করতে আসাদ বিদায় অবশ্যম্ভাবী। ক্ষমতা বদলের সময় এসে ড়েছে সিরিয়ায়।’

মঙ্গলবার বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকায় রাসায়নিক হামলার পরে যুক্তরাষ্ট্র আসাদ বিরোধী অবস্থানে চলে গেছে। অথচ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আইএসয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা ও আসাদকে সরাতে চাওয়া ‘মূর্খামি’ হবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আসাদ বা সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পদক্ষেপ কী? নিক্কির ভাষায়, ‘শুধু আসাদ নয়, আইএসতে নির্মূলের বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তবে আসাদকে ক্ষমতায় রেখে সিরিয়ায় শান্তি আনা যাবে না। আবার সিরিয়ার পিছনে যেভাবে লাগাতার মদত জুগিয়ে চলেছে ইরান তা বন্ধ না করলেও সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। সিরিয়ার সংকট সমাধানের একমাত্র উপায় রাজনৈতিক সমাধান।’

চলতি সপ্তাহেই রাশিয়া যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। রবিবার ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা সচিব মিশেল ফ্যালন বলেন, ‘রাসায়নিক হামলায় নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর জন্য আসাদ সরকারের প্রধান মদতদাতা ক্রেমলিনই পরোক্ষে দায়ী। বিদ্রোহী অধ্যুষিত ইদলিবের উপর গ্যাস হামলা ‘বর্বরোচিত, অনৈতিক ও অবৈধ।’
যুক্তরাষ্ট্রের সুরে সুর মিলিয়ে ব্রিটেনও বলছে, এ বার আসাদবিহীন সরকার গঠনের সময় এসেছে। তা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।

সূত্র: আল-জাজিরা।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.