রোহিঙ্গা ইস্যুতে চাপে সু চি
নূসরাত জাহান: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনী বর্বোরচিত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ নিয়ে চাপে রয়েছে দেশটির সরকার। যদিও তারা বারবারই নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে আসছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের নিয়ে স্বাধীনভাবে জাতিসংঘ তদন্ত দল মিয়ানমারে গিয়ে কাজ করতে দেবে বলে প্রতিশ্রুত দিয়েছিলেন দেশীটর গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী হিসেবে পরিচিত অং সান সু চি। তবে জাতিসংঘ দলকে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন সু চি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার তথ্য অনুসন্ধানে একটি তদন্ত দল পাঠিয়েছিল। তবে রাখাইন রাজ্যের আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে ঢুকতে দেয়নি মিয়ানমার। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বাহিনীর নির্যাতনের কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে সেখানে তদন্ত দল পাঠানোর প্রস্তাবটি পাশ হওয়ার পর মিয়ানমার সরকার এর প্রতিবাদ জানায়্ তারা বলে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
রাখাইন রাজ্যে আসলে কী ঘটছে তা সরেজমিনে তদন্তের নিয়ে আন্তর্জাতিক চেষ্টায় মিয়ানমারের সরকার এখন পর্যন্ত সব চেষ্টায় বাধা দিয়ে এসেছে। তবে এবার যদি মিয়ানমারের সরকার একই কাজ করে তাহলে তাদেরকে জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে অমান্য করতে হবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এই প্রস্তাবের উত্থাপন করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সর্ব সম্মতিতে এটি পাসও হয়েছিল। তবে ভারত, চীন আর কিউবা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল।
জাতিসংঘের এ প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত দল গঠন করে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখবে। রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে এ দল।
তবে জাতিসংঘের এই তদন্ত দল রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ বিষয় অনেকখানি নির্ভর করছে সু চির ওপর। তিনি যদি আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দনে তাহরে তাকে মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরাগভাজন হতে হবে। আর যদি অনুমতি না দেন দাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে পড়তে হবে। তিনি যখন গৃহবন্দি ছিলেন তখন এই বিশ্ব সম্প্রদাযর তার পাশে ছিল। কাজেই এ নিয়ে বেশ চাপে আছে সু চি। তবে মিয়ানমার শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ দলকে সেখানে ঢুকতে বাধা দিতে পারে এমন সম্ভাবনাই প্রবল।
সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস।