176082

ভবিষ্যতে নিয়ে চিন্তিত ইরাকের সুন্নিরা

নূসরাত জাহান: ইরাকের মসুল ইসলামিক স্টেট (আইএস) মুক্ত করতে ইরাকি বাহিনী লড়াই করে যাচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের পর মসুলের একের পর এক এলাকা আইএসয়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা জঙ্গি দলটির জন্য মোটেই সুখবর নয়। তবে এর মানে এই নয় যে মসুল আইএস মুক্ত হলেই সেখানে শান্তি ফিরে আসবে। আইএসের পতনের পর কি হবে সেটা নিয়ে চিন্তায় আছে সুন্নী সম্প্রদায়ের লোকজন। ভবিষ্যতে তাদের এর চেয়েও বেশি অনিশ্চয়তা বা নির্যাতনের শিকার হতে হবে না সেই নিশ্চয়তাই বা তাদের কে দেবে।

মসুলের ওল্ড সিটিতে যৌথ বাহিনীর হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে আইএসকে। তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো না। স্থলে পথে অভিযান ছাড়াও আকাশ থেকে আইএস ঘাঁটি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে তারা হয়তো বেশিদিন মসুল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। তবে বোমা হামলা চালিয়ে আইএস রাজ্যের পতন করাই এই মুহূর্তের জন্য খুব বেশি প্রয়োজনীয় নয়। তবে ইরাকে থাকা শিয়া-সুন্নি বিভেদ দূর করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আইএস হয়তে মসুল ছেড়ে একদিন চলে যাবে, তবে সেখান থাকা সম্প্রদায়িক বিভেদ কিভাবে দূর করবে সেটাই বড় প্রশ্ন। সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর থেকেই সেখানে সম্প্রদায়গত সংঘাত প্রকট আকার ধারণ করেছে।

আইএস-এর পতন হওয়ার পর বেশ কিছূ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। ইরাকি এলিট ফোর্স ছাড়াও ইরাকের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা শিয়া মিলিশিয়া, কুর্দিস বাহিনী এবং আদিবাসী সুন্নী ফোর্স এক হয়ে আইএস বিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এ লড়াই সফল হওয়ার পরই এসব গ্রুপগুলো পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। যা আইএসয়ের চেয়েও ভয়াবহ হবে। এতে করে রাজনৈতিক হানাহানি আরো বাড়বে।

২০১৪ সালে ইরাকি সেনাবাহিনীর ভেঙে গেলে তার সুবিধা নেয় কুর্দিরা। গত তিন বছরে আইএস ইরাকে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। মসুল মূলত একটি সুন্নি অধ্যুষিত নগরী। শিয়া নেতৃত্বাধীর সরকারও সুন্নীদের দাবি-দাওয়া খুব একটা পাত্তা দেয়নি। তারা বেশিরভাগ সময়ই অবহেলিত ছিল।
হাজি সাদ আল জাবুরি জানিয়েছেন, আইএসয়ের উত্থানের পর সুন্নি আদিবাসী গোষ্ঠীরা বেশ ভালো অবস্থানে চলে আসে। আমার প্রতিদিনিই হাজারবার মারা যাই। এটা আমাদের কাছে নরকের মতো। আমাদের চারপাশে শুধুই দরিদ্রতা ও ধ্বংসস্তূপ। আমরা আমাদের সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে ভয়ে থাকি। তাদের আইএস এর নজর থেকে লুকিয়ে রাখি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুন্নিদের মধ্যে বিভেদ রয়েছে। তারা নিজ স্বার্থে কাজ করে। তারা গোষ্ঠী স্বার্থের জন্য কাজ করে না। বিভিন্ন গ্রুপ একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আইএস লড়াই শেষ হলে তাদের যে হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.