175060

পাকিস্তানকে ভারত, ‘আমাদের জ্ঞান দিতে আসবেন না’

নূসরাত জাহান: চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনা চলছে। পাকিস্তানকে চাপে রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছেও তাদের বিরুদ্ধে নালিশ করেছে ভারত। ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে। এতে যে পাকিস্তান বেশ চাপে আছে তা অস্বীকার করার জো নেই। বসে নেই পাকিস্তানও। জম্মু ও কাশ্মীরে সংখ্যালঘুরা বিপাকে আছে- পাল্টা এ অভিযোগ করছে ইসলামাবাদ। এর জবাব ভারত দিল জেনেভাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের অভিবেশনে। ভারত বলেছে, পাকিস্তান শুধু বিশ্বের সন্ত্রাসী কারাখানাই নয়, তারা ক্রমাগতভাবে হিন্দু, খ্রিস্টান, শিয়া, আহমাদিয়ার মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার চালোচ্ছে। কাজেই আমাদের জ্ঞান দেওয়ার তাদের কোনো প্রয়োজন নেই। নিজের চরকায় তেল দেওয়া উচিত তাদের।
ভারতীয় প্রতিনিধি নবনিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘এ কাউন্সিলে ভারতের সংখ্যালঘুদের অবস্থা সম্পর্কে পাকিস্তান বর্ণনা দিচ্ছে। তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে থেকেই ভারতে প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা, ক্রিকেটার, বলিউড সুপারস্টার রয়েছে। পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের কি এমন উদাহরণ আছে? বরঞ্চ তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমামনা নিরোধ) আইনে মামলা হচ্ছে, ব্যাপক নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ রয়েছে।’
এর আগে কাউন্সিলের অধিবেশনে পাকিস্তান বলেছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে ভারত যে নির্যাতন চালাচ্ছে তা গভীরভাবে সেখানকার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ থেকেই দিন দিন সেখানে সহিংসতা, সম্প্রদায়িক সংঘাত বাড়ছে। কাশ্মীরকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করছে।
জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সভায় পাকিস্তানের অভিযোগ উপস্থানের জায়গার ‘অপব্যবহার’ বলে অভিহিত করেছেন নবনিতা। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় অংশে সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদে মদদ এবং ইন্ধনের কাজ বন্ধ করতে পাকিস্তানকে অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষেয়ও হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে বলবো।’
এই কূটনীতিক বলেন, ‘ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীর একটি বহুদলীয় ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজ্য। এখানে রয়েছে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা। এ রাজ্যের গণমাধ্যমও সক্রিয় এবং সুশীল সমাজও তাদের মত প্রকাশ করতে পারে। অপরদিকে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর হচ্ছে রাষ্ট্রবিহীন রাজ্য। এখানকার লোকজনের নেই কোনো অধিকার। শুধু তাই নয়, আজাদ কাশ্মীর সন্ত্রাসীদের খনি। এখান থেকেই সারা বিশ্বে জঙ্গি সরবরাহ করা হয়।’
ভারতের অভিযোগ, জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গি গোষ্ঠীকে পাকিস্তান ক্রমাগতভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে এ রাজ্যের লোকজনের মানবাধিকার রক্ষা প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তাদের এমন অবৈধ কাজ না করাই উচিত। কাজেই ভারতকে জ্ঞান দেওয়ার আগে নিজেরা শোধরান। সূত্র: এনডিটিভি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.