174166

শোধ নিতেই ওবামার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ?

নূসরাত জাহান: নির্বাচনের আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন ট্রাম্প। নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসার পরও আলোচনাতেই আছেন তিনি। বেশ কয়েকটি টুইটে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের ফোনে আঁড়িপাতার অভিযোগ করেছেন। হঠাৎ করে ওবামার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে অনেকেই বিস্মিত। আর ট্রাম্প যে অভিযোগ করেছেন তার স্বপক্ষে তিনি কোনো প্রমাণও হাজির করতে পারেননি। এ নিয়ে ট্রাম্পের পক্ষে সেভাবে কেউ না দাড়ালেও ওবামার পাশে দাঁড়িয়েছেন সাবেক গোয়েন্দা প্রধান জেমস ক্লাপার। তিনি ট্রাম্পর এমন ‘অহেতুক’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের সময় ডেমোক্র্যাটদের কম্পিউটারে আঁড়িপাতার অভিযোগ ওঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। মিত্র দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্টা হিসেবে ট্রাম্প এ অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে কংগ্রেশনাল তদন্ত করার আবেদন জানিয়েছে ট্রাম্পর প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার।
এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমি বারবারই ট্রাম্পের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাশাপাশি তিনি মার্কিন বিচার বিষয়ক বিভাগকে এ বিষয়ে ট্রাম্পের তদন্ত করার অনুরোধ নাকচ করার আহ্বানও জানিয়েছেন। ট্রাম্প তার অভিয়োগের পক্ষে এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। কাজেই এই ইস্যু নিয়ে বেশি আগানো ঠিক হবে না।
ওবামার একজন মুখপাত্র বলেছেন, তিনি তার শাসনামলে কখনো কোন মার্কিন নাগরিকের ওপর নজরদারির নির্দেশ দেননি। মার্কিন আইনে শুধু বিদেশি শক্তির সঙ্গে জড়িত এজেন্টের ক্ষেত্রেই ফোন ট্যাপিং এর অনুমোদন দেওয়া যায়।
প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার বলেছেন সেই তদন্তে এটাও দেখা উচিত যে সাবেক প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন কিনা।
একাধিক টুইটে ট্রাম্প তার পূর্বসূরির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন। তবে সেই অভিযোগ নিয়ে পাত্তা দেয়নি কেউ। পাগলের প্রলাপ হিসেবেই তার এড়িয়ে যেতে বলা হচ্ছে। ওবামার এক মুখপাত্র কেভিন লুইস বলেছেন, ট্রাম্পের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ওভিত্তিহীন। ওবামা কখনোই কোনও মার্কিন নাগরিকের ওপর নজরদারির নির্দেশ দেননি।
এরই মধ্যে ট্রাম্পকে তার অভিযোগ প্রমাণের জন্য বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট রাজনীতিক প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি বা তার কোনও মুখপাত্র কোনও প্রমাণ দেননি। তারা বারবার ঘটনা তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
তবে মার্কিণ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, নির্বাচনি প্রচারের সময় ট্রাম্পের শিবিরের কিছু সদস্যের সঙ্গে রুশ কর্মকর্তাদের গোপন যোগাযোগ নজরদারি করতে এফবিআই আদালতের অনুমতি চেয়েছিল। সেই অনুরোধ প্রথমে প্রত্যাখ্যান করলেও অক্টোবরে এফবিআইকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়। এই বিষয়ে ক্ষিপ্ত ট্রাম্প। এরই মধ্যে কংগ্রেসও তদন্ত করছে এ বিষয়ে। এরই শোধ নিতে ট্রাম্প ওবামার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্যরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তার যোগসাজশের কেলেঙ্কারি থেকে নজর ঘোরাতে ট্রাম্প ওবামার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তুলছেন। এতে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই।
সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.