174161

উত্তর কোরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পাল্টা জবাব যুক্তরাষ্ট্রের

নূসরাত জাহান: চাপে রাখতেই উত্তর কোরিয়া জাপান সাগরে চারটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে সোমবার। এ ঘটনার পরপরই জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এ নিয়ে জরুরি ফোনালাপ করে। কিন্তু তিন দেশ কি পদক্ষেপ নেবে তা বোঝা যাচ্ছিল না। এটুকু বোঝা যাচ্ছিল কোনো একটি বড় পদক্ষেপ আসতে চলেছে। ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বোঝা গেল কি হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার কাজের পাল্টা জবাব হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রই একথা জানিয়েছে।
এরই মধ্যে পিয়ংইয়ং দাবি করেছে, জাপানে অবস্থিত মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করেই এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এগুলো পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল উত্তর কোরিয়ার একটি সেনা ইউনিট। দেশটির নেতা কিম জং উন ব্যক্তিগতভাবে এ পরীক্ষা তত্ত্বাবধান করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তারা। ওই মহড়াকে উত্তর কোরিয়ায় হামলার প্রস্তুতি বলে মনে করছে দেশটি।
দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, টার্মিনাল হাই অ্যালটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম (থাড) স্থাপন করা হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি মোকাবিলা করতে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া চারটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পরই এই পদক্ষে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ শুরু করবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এম পদক্ষেপে উত্তর কোরিয়া ছাড়াও ক্ষুব্ধ চীন। বেইজিং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপকে তারা এশিয় অঞ্চলে জোরপূর্বক যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধির পদক্ষেপের একটি অংশ মাত্র। এভাবেই তারা এখানে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার অনেকেও যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের বিরোধী। তাদের মতে, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই উত্তর কোরিয়ার টার্গেটে পরিণত হবে। সামরিক এলাকাগুলোর আশেপাশে থাকা মানুষদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
তবে টার্মিনাল হাই অ্যালটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম কি এবং সেটার কাজ কি তার আগে জানা প্রয়োচন। এটা ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে থাকা অবস্থায়ই সেটিকে ভূপাতিত করতে সক্ষম। মূলত গতিশক্তি ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়। এটি ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে এবং ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় কাজ করতে পারে।
গত সপ্তাহ থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দুই দেশের এই ‘কথিত’ বার্ষিক এই মহড়াকে উত্তর কোরিয়া তাদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। তাইতো তারা পাল্টা হিসেবে সোমবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো। চীন সীমান্তের কাছে টংচাং রি এলাকা থেকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। তবে সেগুলো কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। এ ঘটনার একদিন পরই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট এ কাজ করলো।

সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.