174171

শিশুর জলবসন্তে নিরামিষ নয়

গাজী খায়রুল আলম: জলবসন্ত রোগটি ভাইরাসঘটিত। ভাইরাসের নাম হচ্ছে ভ্যারিসেলা। এই রোগে আক্রান্ত মানুষের শরীর থেকে রোগ ছড়াতে পারে সুস্থ মানুষের শরীরেও। রোগীর লালা বা নাকের পানির মাধ্যমে। আক্রান্ত মানুষের ত্বক, রক্ত আর মিউকাস মেমব্রেনে থাকে ভ্যারিসেলা ভাইরাস। রোগ ছড়ায় বাতাস বা রোগীর জামাকাপড় থেকেও।
মায়ের শরীরের অ্যান্টিবডি শরীরে থাকায় জন্মাবার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ বাচ্চা এই রোগে আক্রান্ত হয় না। তারপর থেকে শুরু করে যে কোনও বয়সেই হতে পারে জলবসন্ত বা চিকেনপক্স। অপুষ্ট বাচ্চা বা অন্য রোগে ভোগা বাচ্চা রোগটায় কাবু হয় বেশি। বেশি কাহিল হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন শিশুরা।
স্মল পক্স বা গুটিবসন্ত পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে অনেককাল। গুটিবসন্তের তুলনায় জলবসন্ত নেহাতই মামুলি রোগ। কয়েকটা দিন জ্বর ও অন্য কিছু শারীরিক কষ্ট ছাড়া তেমন কোনো জটিলতা নেই জলবসন্তে। তবু জলবসন্তকে নিয়ে হাজারটা অকারণ ভয়ে আক্রান্ত শিক্ষিত মানুষ।

জলবসন্ত হলে যা করবেন
১।বাচ্চার জলবসন্ত হলে প্রয়োজন সুষম খাদ্য। খুব ছোট শিশু দুধ খাবে, একটু বড়রা খাবে দুধের সঙ্গে শক্ত খাবার।
২। দেখতে হবে শিশু যেন যথেষ্ট পরিমাণে খায়। একবারে না খেতে চাইলে অল্প অল্প করে বার বার দিতে হবে।
৩। আমিষে অভ্যস্ত শিশুরা আমিষ খাবে, নিরামিষে অভ্যস্তরা নিরামিষ। দুর্বল শরীরকে সারাতে একটু বেশি প্রোটিন খাওয়া ভালো।
৪। বাচ্চাকে দেওয়া যেতে পারে দুধের সঙ্গে কর্নফ্লেক্স, দুধ দিয়ে তৈরি সুজির হালুয়া বা গমের খিচুড়ি। চলবে দালিয়া বা শ্যামাচালের খিচুড়ি।
৫। জলবসন্ত খুব বেশি হলে সাতদিন থাকে। র‌্যাশ দেখা দেবার এক দিন আগে থেকে র‌্যাম বার হবার ছ-সাত দিন।
৬। র‌্যাশ থেকে জলভরা ফুস্কুরি দেখা দিয়ে তা শুকিয়ে চলটা হয়ে শুকিয়ে পড়ে যাওয়া পরযন্ত জলবসন্তের রোগীকে মশারির নিচে শুইয়ে রাখা যাবে না। কারণ এটা রোগীর মনের পক্ষে ক্ষতিকর।
৭। র‌্যাশ বার হবার ছ-সাত দিন পর থেকে জলবসন্তের রোগী আর রোগ ছড়ায় না।গুটি বসন্তের রোগী রোগ ছড়াত চলটা উঠা র‌্যাশ পুরোপুরি না শুকানো পর্যন্ত। তাই জলবসন্তের রোগীকে ছ্সাত দিন পরে ভয় পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
৮। প্রথম সাত দিন রোগীকে আলাদা রাখুন, পরে একসাথে রাখলে কোনো সমস্যা নেই্।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.