174064

রাজনৈতিক মেরুকরণই মোদির অস্ত্র

নূসরাত জাহান: উত্তরপ্রদেশে চলছে বিধানসভা নির্বাচন। সাত পর্বের নির্বাচনের আর মাত্র এক পর্ব বাকি। শেষ পর্বের ভোট হবে বারানসীসহ সাত জেলায়। যেখানে বিধান সভার ৪০ আসন রয়েছে। বিধানসভার নির্বাচন বলে কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বসে আছেন। বসে থাকলে কি তার চলে। প্রধানমন্ত্রী বলে কথা, তারওপর বিজেপির প্রধান। শেষ পর্বের ভোটের আগে বারানসীতে ঘাঁটি গেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পরিস্থিতি থেকে বিশ্লেষকরা বলছেন, শেষ বেলায় পুরোদস্তুর মেরুকরণের রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
লোকসভা নির্বাচনের সময়ই প্রধানমন্ত্রী মোদির কেন্দ্র ছিল বারাণসী। হিন্দুত্বের সেই কথা বলে এবার বিধানসভা নির্বাচনে ভালো করার চেষ্টা করছেন। তার দৌড় ঝাঁপ সবই বিজেপিকে টিকিয়ে রাখার জন্য। তাইতো বিধানসভা নির্বাচনের শেষ দফায় এসে মোদির এই ‘প্রচারের বাড়াবাড়ি’ দেখে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিরোধী নেতা শত্রুঘ্ন সিনহা বলেছেন, ‘জয় পেতে এবং বিজেপিকে টিকিয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মোদি।’
নির্বাচনি প্রচারের অংশ হিসেবে মোদি বারানসীর মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে পূজা করেছেন মোদি। মঙ্গলবার ঘুরলেন পথে-পথে। কর্মসূচি অনুযায়ী রোড শো-ও করেছেন তিনি। এ রোড শো ছিল প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। ব্যাপী সেই রোড শো শেষ হতে হতে সন্ধে গড়িয়ে যায়। হুড খোলা গাড়িতে হাত জোড় করে একেবারে সাবেকি নেতার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষের ছোড়া ফুলের প্রত্যুত্তর দিয়েছেন পাল্টা ফুল ছুড়ে।
রোড শো-র শেষে বক্তব্য রাখেন মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠে। তিনি বলেন, ‘মা গঙ্গার ডাকেই আমি আজ বারানসীতে। মার্ক টোয়েনের কথা উদ্ধৃত করে বলেছেন, ইতিহাসের চেয়েও পুরনো শহর হল বারানসী। ঐতিহ্য বজায় রেখেই আধুনিকভাবে গড়ে তোলা হবে এই শহরকে। পর্যটনের হাত ধরে বারানসীর অর্থনীতি যাতে সজীব হয়ে ওঠবে।’
তবে রাজনৈতিক মেরুকরণের অস্ত্র আর বিরোধী শিবিরকে আক্রমণে করতে ভুল করেননি মোদি। প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র হওয়ায় কীভাবে উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকার বারানসীর সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। কেন্দ্র পরিকাঠামো উন্নয়নে উত্তর প্রদেশকে অর্থ পাঠালেও রাজ্য সরকার সেই টাকা খরচে ব্যর্থ বলে দাবি করেছেন মোদি।
রাহুল গান্ধী ও মায়াবতীকেও ছেড়ে কথা বলেননি মোদি। নোট বাতিল থেকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক কোনো প্রসঙ্গই বাদ দেননি তিনি। ভোট পেতে আর বিজেপির সমর্থন বাড়াতে তিনি কোনো সুযোগ ছাড়েননি।
মোদির এমন বাগাড়ম্বর দেখে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা আসনগুলোর ভবিষ্যৎ মোটেই সুরক্ষিত নয়। তাই তিনি এত বেশি তৎপর।’ মোদি কতটা কি করতে পারলেন সেই ফল জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আর সাত দিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.