174067

উত্তেজনার নাম উত্তর কোরিয়া

নূসরাত জাহান: জাপান সাগরে চারটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। রকেটগুলোর মধ্যে তিনটি পড়েছিল জাপান সাগরের এক হাজার কিলোমিটার দূরে জাপানের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে। পিয়ংইয়ংয়ের এ কাজকে হুমকি হিসেবেই গণ্য করছে জাপান। এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। উত্তর কোরিয়ার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তারা যেন আলোচনার বাইরে থাকতে চাইছে না। তাইতো একের পর এক বিষয় নিয়ে তারা আলোচনায় থাকতে চাইছে। উত্তর কোরিয়া সব সময়ই আলোচনায় থাকে পরামাণু অস্ত্র ভাণ্ডার বৃদ্ধি নিয়ে। সম্প্রতি দেশটির নেতার সৎ ভাই কিম জং নামের হত্যা নিয়ে। এ নিয়ে আলোচনার চলার মাঝেই জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো তারা।
উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হুমকি বলে অভিহিত করেছেন। এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাতিসংঘ প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন। উত্তর কোরিয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজ করেছে। এর মূল্য তাদের দিতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, পিয়ংইয়ং চীনের সীমান্তবর্তী এক জায়গা থেকে এ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর টোকিও, ওয়াশিংটন ও সিউল কড়া প্রতিক্রিয়া এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে তিন দেশের নেতারা জরুরি ভিত্তিতে ফোনালাপ করেছে। তবে এর জবাবে তারা কি পদক্ষেপ নিতে পারে তা নিয়ে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। এসব নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর কার হবে সেই বিষয়ে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া আলোচনা করেছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
পিয়ংইয়ংয়ের কাজে রাশিয়াও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ক্রেমলিনের এক মুখপাত্র বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার এমন কাজে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে। আর যার প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বে। যা মোটেও কাম্য নয়।
এ পরীক্ষা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে এটা বুঝিয়ে দেয় যে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে। এটা জানান দিতেই তারা কিছুদিন পরপর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষা করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর গতিপথ কি ছিল তা পরীক্ষা করে দেখছেন তারা। যাতে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে কতটা উন্নতি করেছে তা জানা যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার জবাব দিতেই উত্তর কোরিয়া এ পরীক্ষা চালালো। কারণ উত্তর কোরিয়ার ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার এই মহড়া আসলে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে অভিযান চালানোর সামিল।
পিয়ংইয়ং এর আগে দাবি করেছিল, তারা আন্তঃহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যে ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু বোমা বহন করতে পারবে। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রেও আঘাত হানতে সক্ষম।
সূত্র: গার্ডিয়ান।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.