174061

ভারতে বন্ধ হয়নি মেয়ে ভ্রুণ হত্যা

নূসরাত জাহান: ভারতে মেয়ের ভ্রুণ হত্যা নতুন কোনো ঘটনা নয়। মেয়ে শিশু জন্মের আগেই ভ্রুণ অবস্থাতেই তাদের হত্যা করা হয়। প্রতি বছর এভাবে লাখ লাখ কন্যা শিশুর ভ্রুণ হত্যা হয়। এরই মধ্যে মেয়ে শিশু বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন ডা. গণেশ রাখ। তার হাসপাতালে কোনো নারী মেয়ে শিশু জন্ম দিলে তার কাছ থেকে কোনো টাকা নেন। মেয়ে শিশুদের বাঁচাতে এ পদক্ষেপকে ‘ছোট্টা অংশগ্রহণ’ বলে অভিহিত করেছেন ডা. গণেশ।
তিনি বলেন, এদেশে শিশু জন্মে আগেই জেনে নেওয়া হয় গর্ভের থাকা ভ্রুণটি ছেলের নাকি মেয়ে। যদি ভ্রুণটি মেয়ের হয় তাহলে তাকে অবলিলায় হত্যা করা হয়। আর এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে এখানে।
১৯৬১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ছেলে-মেয়ের অনুপাত ছিল ১০০০: ৯৭৬। আর ২০১১ সালে সেই হার এসে দাড়িয়েঝে ১০০০: ৯১৪। এসই মেয়ে শিশুর ভ্রুণ হত্যার ফল।
২০০৭ সালে পুনেতে ছোট একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছিলেন ডা. গণেশ। বলেন, ‘হাসপাতালে গর্ভবতী যেসব নারীকে ভর্তি করা হতো তাদের পরিবারের লোকজনের আশা থাকতো ছেলের। যখন কোনো নারী মেয়ে সন্তান জন্ম দিতেন তার বাড়ির লোকের কাছে এই খবর দেওয়া ততটাই কঠিন হতো, যতটা কঠিন কোনো রোগীর মৃত্যুর খবর দেওয়া। অনেক সময় মেয়ে সন্তান জন্ম দিলে রোগীর বাড়ির লোকজন হাসপাতালের বিল দিতে চাইতো না। তাই আমি কোনে নারী মেয়ে জন্ম দিলে তার কাছ থেকে টাকা নেই না। মেয়ে শিশুদের বাঁচিয়ে রাখার এটা ছোট্ট একটা উদ্যোগ মাত্র।’
মেয়ের শিশুর হত্যা বন্ধে ভারত সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারপরও থামেনি ভ্রুণ হত্যা বন্ধ। গণহত্যার হারে ভারতে মেয়ে ভ্রুণ হত্যা চলছে। সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্র পুলিশ রাজ্যের একটি হাসপাতালের কাছে এক গর্তের মধ্যে গর্ভপাত করা ১৯টি মেয়ে শিশুর ভ্রূণ পেয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফেলে দেওয়ার উদ্দেশে নিয়ে ভ্রূণগুলো মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। অবৈধ উপায়ে গর্ভপাত করাতে গিয়ে এক নারীর মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়েই এসব ভ্রূণগুলো খুঁজে পান তারা।
মেয়ের ভ্রুণ হত্যা বন্ধে আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই ঘটনা ফের প্রমাণ করছে যে শত প্রচার ও উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও মেয়ে ভ্রূণ হত্যা বন্ধ নেই, চলছেই। মেয়ের ভ্রুণ ফেলে দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও অনেক হয়েছে। ২০১২ সালে ইন্দোর শহরে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে আটটি এবং ২০০৯ সালে মহারাষ্ট্রে ১৫টি মেয়ে শিশুর ভ্রূণ উদ্ধার করা হয়।
সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.