বোরকা পরা ভোটার নিয়ে চিন্তায় বিজেপি
নূসরাত জাহান: ভারতের উত্তর প্রদেশে চলছে বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনের শেষ দুই দফার ভোট গ্রহণের আগে বিজেপি নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠিদিয়েছে। কারণ তারা বোরকা পরা ভোটার নিয়ে চিন্তিত। চিঠিতে তারা বলেছে, যারা বোরকা পরে ভোট দিতে আসবেন তাদের পরিচয় যেন ভালো করে পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাদের ধারণা, বোরকা পরে অনেক পুরুষ ভোট দিচ্ছেন। তাদের কাছে এমন খবরও রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে এমন চিঠি পাটানো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মুসলিম সমাজ। তারা বলছে, এটা বিজেপির অসুস্থ মানসিকতার পরিচয়। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট মেরুকরণের চেষ্টা করছে তারা।
উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকি আরও দুই দফা। ৮ মার্চ শেষ দফার ভোট হওয়ার কথা। শেষ দুই দফায় ৮৯ আসনে ভোট হবে। উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যার প্রায় ২০ ভাগই মুসলমান।
এর আগের ভোটের সময় বিজেপির কর্মীরা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়েছে, বোরকা পরে অনেক পুরুষ ভোটার ভোট দিচ্ছে। তবে তাদের এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি।
বিজেপির উত্তর প্রদেশ মুখপাত্র বিজয় পাঠক বলেছেন, `অনেক এলাকা থেকেই কর্মীরা জানিয়েছেন যে বোরকা পরে পুরুষরা ভোট দিচ্ছেন। কিন্তু বুথে নারী ভোট কর্মী নেই। তাই বোরকার আড়ালে আসলে নারী নাকি পুরুষ আছেন তা দেখা সম্ভব হয়নি। তাই আমার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি। এর মধ্যে কোনো রাজনীতি বা ধর্মীয় বিষয়ও নেই।’
বিজেপির এই দাবীকে অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় বলে অভিহিত করছে মুসলিম নারী সংগঠনগুলো। মুসলিম ‘উইমেন পারসোনাল ল বোর্ডের’ প্রেসিডেন্ট শাহিস্তা আম্বর বলেন, ‘বিজেপি বা তার শাখা দলগুলো যখন এসব কথা বলে, তাতে তাদের অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে বলেই এসব কথা বলছে। নির্বাচনি প্রচারের সময় তারা ধর্মের প্রসঙ্গ এনে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ করেছে। আর এখন এসব কথা বলে একটা বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে।’
তবে বিজেপি এই অভিযোগের পর ভোট গ্রহণের সময়ে যে বোরকা পরা ভোটারদের পরিচয় খতিয়ে দেখতে বাড়তি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে খবর পাওয়া যায়নি।
৪০৩ আসনের বিধানসভায় প্রায় ১২০ আসন এমন রয়েছে যেখানে মুসলমান ভোটারের সংখ্যা ২০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ প্রার্থীদের বাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মুসলমানরা বেশ বড় ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।