173974

‘সমকামিতার’ অভিযোগে সিনেমা নিষিদ্ধ করবে রাশিয়া

নূসরাত জাহান: ডিজনির নতুন সিনেমা ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট’ এর ট্রেইলার খুব বেশি সময় প্রকাশ করা হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিনেমার ট্রেইলার ১৩ কোটি বার দেখা হয়েছে। তবে রাশিয়ার কর্মকর্তারা ডিজনির নতুন সিনেমার বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ প্রচারণা শুরু করেছে। এ অভিযোগ ‘বিউটি এন্ড দ্য বিস্টরাশিয়ার সমকামী প্রোপাগান্ডা বিরোধী আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা তা যাচাই করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন কর্মকর্তারা। আগামী ১৬ই মার্চ রাশিয়ায় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবার কথা রয়েছে।
রাশিয়ার সংস্কৃতিমন্ত্রী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেছেন, ডিজনির নতুন সিনেমাটি যাচাই-বাছাই করে দেখার পর এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিনেমাটিকে ‘নির্লজ্জ প্রচারণাহিসেবে অভিহিত করেছেন দেশটির একটি এমপি। বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্টের এই রিমেকে প্রথমবারের মতো কোনো চলচ্চিত্রে সমকামী চরিত্র দেখা যাবে। রুশ আইনে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে সমকামী প্রচারণা চালানো নিষিদ্ধ।
২০১৩ সালে করা রাশিয়া কর্তৃপক্ষ একটি আইন পাস করে। এ আইনে সমকামিতাকে ‘প্রথা বিরোধী যৌন সম্পর্ক হিসেবে আখ্যা দেওযা হয়। তবে মানবাধিকার সংস্থা সমকামীদের অধিকার আদায়ের সংস্থাগুলো এই আইন পাসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। যদিও রাশিয়ায় সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না। ১৯৯৩ সাল থেকে এ পরিবর্তন আসে আসে দেশটিতে। আর ১৯৯৯ সালে সমকামিতাকে মানসিক অসুস্থতার তালিকা থেকেও বাদ দেয়া হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সমকামিদের ওপর বেশ কিছু হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্টের পরিচালক সিনেমায় ‘বিশেষ সমকামী মূহুর্তের কথা বলেছেন । রুপকথার কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাতে লেফু নামের একটি চরিত্রকে সমকামী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এতে অভিনয় করেছেন এমা ওয়াটসন। তার অভিনীত চরিত্রের নাম বেল
লেফু চরিত্রে অভিনয় করছেন মার্কিনি অভিনেতা জশ হাড। সিনেমায় তাকে গ্যাসটনের প্রতি টান অনুভব করতে দেখা যাবে। তবে সিনেমা এ দুজনের কোনো আপত্তিকর দৃশ্য নেই যে রাশিয়া এমন অভিযোগ তুলতে পারে।
রাশিয়ার এমপি ভাতালে মিলোনভ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে সিনেমাটি মুক্তির আগে এটি ভালো করে দেখার দাবি জানিয়েছেন। যদি এ সিনেমায় তাদের আইন পরিপন্থী এবং সমাকামী প্রচারণামূলক কোনো ‍উপাদান থাকে তাহলে তারা সিনেমাটি নিষিদ্ধ করবে।
আরেক এমপি আলেক্সজান্ডার শোলোকভ জানিয়েছেন, ‘সিনেমাটি যদি আইন লঙ্ঘন করে তাহলে এটি নিষিদ্ধ করা হবে রাশিয়ায়। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সিনেমার দেখানো সব কাগজপত্র দিয়ে দিয়েছি। কারণ আমরা মনে করছি এটি আমাদের আইন বিরোধী নয়।’
তবে রাশিয়ার এক অভিনেতা পাভেল দেরেভেয়াঙ্কো রাষ্ট্র পরিচালিত টিভি রাশিয়া টুয়েন্টিফোর চ্যানেলকে বলেছেন, ‘সিনেমা হলে আমি আমার সন্তানদের নিয়ে যাবো না।’ এখন দেখার বিষয় আসলে আইন লঙ্ঘনের মতো আদেও কোনো কিছু সিনেমায় আছে কিনা।
সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.