173947

ট্রাম্পের গর্ভপাত বিরোধী নীতি, ঝুঁকিতে নেপালের স্বাস্থ্যসেবা

নূসরাত জাহান: ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত নীতি গ্রহণ করছেন। যার ফল ভোগ করতে করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো বিশ্বকে। শপথ নেওয়ার পরেই ট্রাম্প নতুন এক নীতি নিয়েছেন। সে অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র গর্ভপাতে সহায়তাকারী সংস্থাগুলোকে কোনো আর্থিক সাহায্য দেবে না। এমনকি গর্ভপাত একটি বিকল্প এটি তারা কোনো নারীকে বলতেও পারবেনা।
বিশ্বের প্রায় সবখানে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ঘটনা ঘটে। বিয়ের আগে গর্ভধারণ নিয়ে সাধারণত নারীকেই জটিলতায় পড়তে হয়। এক্ষেত্রে গর্ভপাত ছাড়া নারীদের সামনে আর কোনো উপায়ও থাকে না। কারণ সমাজপরিবার বিষয়টি মানতে পারে না। গর্ভপাতের ঘটনা যেসব দেশে বেশি ঘটে থাকে তার একটি নেপাল।
বিভিন্ন সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, নেপালে মোট গর্ভধারণের মধ্যে ৫০ শতাংশই অপ্রত্যাশিত। এ কারণেই গর্ভপাতের সংখ্যাও বেশি। আবার নিরাপদ গর্ভপাতের ব্যবস্থাও সেখানে অপ্রতুল। এজন্য নিরাপদ গর্ভপাতে সহায়তায় কাজ করছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা। তবে ট্রাম্পের নয়া নীতির কারেণ এসব সংস্থাগুলো তহবিল হারাতে যাচ্ছে। ফলে নেপালি নারীদের নিরপদে গর্ভপাতের সেবা পাওয়া ব্যাহত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেপালি নাগরিক তার শ্যালিকার মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ‘আমার শ্যালিকা গর্ভপাত করতে একটি ক্লিনিকে গিয়েছিল। সেখানে তাকে কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। সেই ওষুধ খাওয়ার পরপরই রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুতই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।’
নেপালের মতো গরিব দেশগলোর ট্রাম্পের গর্ভপাত বিরোধী নীতি আসলে ঝুঁকিতেই ফেলতে পারে
এ বিষয়ে ম্যারি স্টোপসের কর্মকর্তা সোফি হোডার বলেন, ‘বাস্তবতা হলো অর্থ সাহায্য কমিয়ে দেয়ায় যেসব নারীরা পরিবার পরিকল্পনার সুযোগ পাচ্ছিল না তাদের জীবনের কোনো সময় গর্ভপাতের প্রয়োজন হতে পারে। ৮০ হাজারের মতো নারী এ কারণে গর্ভপাতের সহায়তা নেবে যদিও এজন্য তারা কেউই দায়ী নয়। সাহায়্য বন্ধ হলে তাদের পক্ষে এটা করা সহজ হবে না।’
নেপালে মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা সাহায্যের অর্থ ব্যবহৃত হতো পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিতে। যেসব কর্মসূচি নানা আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা পরিচালনা করছে। কিন্তুআর্থিক সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ সেবাও এখন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ট্রাম্পের এ নীতির কারেণ অর্থের অভাবে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানে চলা  স্বাস্থ্যসম্মত ও ঝুঁকি মুক্ত গর্ভপাতের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে দারিদ্র এসব সারীর দ্বারস্থ হতে হবে অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ ক্লিনিকগুলোর কাছেই। এ থেকে তাদের মৃত্যুও হতে পারে। সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.