173864

সুস্থ-দীর্ঘ জীবনের টোটকা!

আজীবন সুস্থ থাকা বা শতায়ু হওয়ার নানা মিথ ও গল্প প্রচলিত আছে। তবে শুধু রূপকথা নয়, জীবনাচরণ দিয়ে এরকম নিরোগ, সুন্দর, দীর্ঘ আয়ুর নজীর তৈরি করেছেন কেউ কেউ, বিশেষ জনগোষ্ঠী। তাই মনে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক, সুস্থ-দীর্ঘ জীবনের রহস্যটা কী?

ইতালির এমা মোরানো জীবিত ছিলেন ১১৬ বছর। নিজের দীর্ঘায়ু সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, ’আমার ওপর মাতব্বরি আমি মানতে চাইনি কখনও।’ ৩৮ বছর বষয়ে বিয়ের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর বাকি জীবনটা একাই কাটিয়েছেন তিনি এবং এভাবেই তিনি সুখি ছিলেন। আর রক্তস্বল্পতা কাটাতে প্রতিদিন দুটো কাচা ডিম খেতেন বলেও জানান তিনি।

দীর্ঘ ও নিরোগ জীবনের রূপকথাতুল্য নজীর তৈরি করেছেন পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে দুর্গম পার্বত্য এলাকা হুনজা উপত্যকায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠী। মূলত চারটি নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর লোকজন সেখানে বসবাস করলেও তারা সবাই হুনজা নামেই পরিচিত। হুনজাদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার ৯৫ শতাংশ। তারা খুব অতিথিবৎসল ও উষ্ণ প্রকৃতির। হুনজাদের মধ্যে কারও কারও আয়ু দেড়শো বছরের বেশি বলেও জানা যায়। হুনজা নারীদেও ৬৫ বছর বয়সেও গর্ভধারণের নজীর রয়েছে। বেশির ভাগ হুনজাই সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করেন এবং তারা প্রক্রিয়াজাত খাবার খান না বললেই চলে।

এসব বিষয় যাচাই করে বিশেষজ্ঞরা সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর কতগুলো মানদ- চিহ্নিত করেছেন।

১. গবেষকরা বলছেন, সারা জীবনভর মস্তিষ্ক সচল রাখাখুব প্রয়োজন। এজন্য পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া, গঠনমূলক চিন্তার মধ্যে থাকা, সুস্থ চিন্তা মধ্যে থাকার চেষ্টা করা উচিত। সুস্থ মন থেকেই সুস্থ জীবন!
২. ভালো থাকার জন্য, সুস্থ থাকার জন্য সুস্থ সামাজিক সম্পর্কেও মধ্যে থাকা প্রয়োজন। একা থাকা বা অনেকের সঙ্গে থাকাটা বড় বিষয় নয়। বরং এমন সম্পর্কের মধ্যে থাকা উচিত যেখানে নিজেকে জানার, নিজের চাওয়া-পাওয়া ও অনুভূতিগুলোকে বোঝার এবং গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ থাকে। নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে পারার ও আত্মোন্নয়নের সুযোগ রয়েছে এমন সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজন রয়েছে। তেমনি খারাপ সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসাও সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে।
৩. মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানসিক চাপকে বিবেচনা করা হয় গুপ্ত ঘাতক হিসেবে। আধুনিক জীবনে চাপ এড়িয়ে চলা কঠিন। তবে মেডিটেশন, প্রার্থণা বা নিয়মানুবর্তিতা চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৪. ভালো থাকার অন্যতম অনুসঙ্গ ভালো খাবার। প্রাকৃতিক খাবার জীবনীশক্তির অন্যতম উৎস। যথাসম্ভব প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার ও প্রাকৃতিক খাবারে নির্ভরতা বাড়ানোর মাধ্যমে রোগমুক্ত জীবনের চর্চা করা সম্ভব।
৫. সক্রিয়তা, সচলতা, কর্মস্পৃহা জীবনীশক্তি বাড়ায়। মানুষকে দীর্ঘায়ু করে। বয়স কমানো সম্ভব না হলেও শরীরটাকে সচল রাখার মাধ্যমে বয়স বাড়ার প্রভাবটাকে তো আটকানোই যায়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.