173867

সমাধানের পথ খুঁজছে চীন

নূসরাত জাহান: ক্ষমতায় আসার আগে থেকে চীনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে চীনের। দক্ষিণ চীন সাগরে রণতরণী পাঠিয়ে সেই উত্তেজনা এখন চরমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনে চাপে ফেলে বাগে আনতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইতো তারা নানা পন্থা অবলম্বন করছে। তবে চীনের কূটনীতিক ইয়াং জিয়েচি বলেছেন, বেইজিং এখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বের’ কথা ভাবছে।
চীন-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক সম্পর্কের উন্নতি এবং বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে এরই মধ্যে নানা বৈঠক হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করেছেন জিয়েচি। বৈঠকে বেজিংয়ের পক্ষ থেকে সুসম্পর্কের বার্তাদিয়েছেন জিয়েচি।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলতেন, একবিংশ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক হবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে। মার্কিন বিশেষজ্ঞদের মতে, অপেক্ষাকৃত উদারপন্থীরা ওবামার সেই মন্তব্যের তাৎপর্য গয়েতো সেই সময় বুঝতে পারেনি চীন। কট্টরপন্থী ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে বেজিং। নির্বাচনি প্রচারের সময়চীন সম্পর্কে কঠোর অবস্থানের কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। জয়ের পর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলে চীনের সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেয় তারা। ট্রাম্পের পররাষ্ট্র সচিব রেক্স টিলারসনের মন্তব্য সেই আশঙ্কা আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, দক্ষিণ চীন সাগনিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে, প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক সমাধানও খুঁজতে পারে।
তবে বিষয় এমন নয় যে চীন এসব কথা মেনে নিয়েছে। ওয়াশিংটনের প্রতিটি কথা জবাব তারা দিয়েছে। তাইওয়ান ইস্যুতে ‘এক চীন নীতলঙ্ঘনের ফল ভালো হবে না বলে সতর্ক করে দেয়। দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চীনের ‘সার্বভৌমত্ব’কে অস্বীকার করার সামিল। তবে কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি অন্য পথে যুক্তরাষ্টের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা  চালিয়ে যাচ্ছে চীন। চীনা কূটনীতিকের সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর তারই প্রমাণ দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাণিজ্যিক সম্পর্কটা রয়েছে বলেই চীন-মার্কিন সম্পর্কে স্থিতিশীলতাটা এখনও রয়েছে। ওই আদানপ্রদান না থাকলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হত। কিন্তু সেই পরিস্থিতিটাও ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। তাই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার নতুন নতুন পন্থা খুঁজতে হচ্ছে তাদের।
সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনার মঞ্চে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে ঠিকই। তবে বেজিং মনে করছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ওইটুকু সম্পর্ক যথেষ্ট নয়।
তবে চীনের এ উদ্যোগ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন বৃহৎ শক্তি হয়ে উঠলেও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যায়ে পৌঁছাতে এখনও অনেকটা দেরি আছে। এ কথা বুঝতে পেরেই এখন সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টা করছে চীন।
সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.