275552

মায়ের লাশ আটকে রেখে ২ ছেলেকে পুলিশে দিলেন চিকিৎসকরা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলায় এক নারী রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।  বিষয়টি নিয়ে রোগীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে চিকিৎসকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।  একপর্যায়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীর লাশ আটকে রেখে তার দুই ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পরিবারের।  তবে চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

নিহতের স্বামী মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন।  শুক্রবার রাতে বুকে ব্যথা ও পায়খানা-প্রস্রাব জটিলতা নিয়ে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি হন।  শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে হাসপাতালে অবস্থানরত আমার ছেলে চিকিৎসককে ডাকতে যায়। তবে চিকিৎসক আসেননি।  সেই সময় ওই চিকিৎসক ঘুমাচ্ছিলেন।  উল্টো তিনি রোগীকে নিয়ে যেতে বলেন।  তখন ছেলে বলে রোগীকে কী করে আনব। চিকিৎসক তখন কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলেন। 

এর পর কাগজপত্র নিয়ে গেলে ইন্টার্ন চিকিৎসক তা দেখে বলেন, সব তো ঠিক আছে।  এ সময় বারবার রোগীকে দেখতে যেতে বললেও তিনি যাননি।  এর পর ওই রাতেই চোখের সামনে ছটফট করতে করতে আমার স্ত্রী মারা যায়।  মায়ের এমন মৃত্যুতে আমার ছেলে মো. মোস্তাকিম গিয়ে চিকিৎসকের কাছে জানতে চায় তারা কেন দেখতে এলেন না।  এ নিয়ে আমার ছেলের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয় চিকিৎসকের। 

আমি বিষয়টি জানতে পেরে চিকিৎসকের হাত-পা ধরে মাফ চেয়েছি।  এ সময় একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক আমার গায়েও আঘাত করেন এবং অপর দুই ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম কাবির ও সাদ্দাম হোসেনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।  তাদের সোনাডাঙ্গার পুলিশ থানায় আটকে রাখে।  আর আমার স্ত্রীর মরদেহও হাসপাতালে আটকে রাখা হয়। 

খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর শামছুদ্দিন আহমাদ প্রিন্স এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এলে তাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।  আব্দুর রাজ্জাকের ভাইপো মামুন বলেন, আমার চাচির লাশ দুপুর ১২টা পর্যন্ত আটকে রাখে হাসপাতালে।  ডাক্তাররা আমার চাচাতো ভাই মোস্তাকিমকে মেরে জখম করে ও জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসক কামরুল হাসান বলেন, মনিশ কান্তি দাস ও প্রীতম কর্মকারের সঙ্গে রোগীর স্বজনের হাতাহাতি হয়েছে।  আমি ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের পক্ষ থেকে এসে কথা বলেছি।  আমরা অনেক আগেই মরদেহ ডিসচার্জ করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার যুগান্তরকে বলেন, মানুষ মারা গেলে একটি প্রক্রিয়া আছে।  সে অনুযায়ী মরদেহ ছাড়তে হয়।  মরদেহ আটকে রাখার কিছু নেই।  পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশ তাদের নিয়ে গেছে।  আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো জিডি বা মামলা করিনি।

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.