274766

পরীমণি-পিয়াসা-মৌর কাছে যাতায়ত কারী অতিথিদের জন্য ‘স্বস্তির খবর’

‘স্বস্তির খবর’ এলো নায়িকা পরীমণি, কথিত মডেল পিয়াসা ও মৌদের কাছে যাতায়াতকারী অতিথিদের জন্য।  এতোদিন আড়ালে থাকা তাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়গুলো প্রকাশ হওয়ার পর, এ সংশ্লিষ্টে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম প্রকাশ হচ্ছে।  যে কারণে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।  এমন তথ্য ছড়ানো অনেকের সম্মানহানি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট ঘটনার তন্তকারীরা।  পরীমণি-পিয়াসাকেন্দ্রিক মামলাগুলোর তদন্তে সিআইডি’র প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনেককে ডাকা হচ্ছে।  তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের ডাকা হচ্ছে, তাদের কোনো তালিকা হচ্ছে না বলে জানা গেছে।  এ নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

নায়িকা, মডেল ও তাদের সহযোগীদের বাসায় অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ৬টি দামি গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে রয়েছে পরীমণির গাড়ি টয়োটা হেরিয়ার, পিয়াসার ফেরারি ও বিএমডব্লিউ, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের ২টি হেরিয়ার এবং শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসানের ফেরারি গাড়ি।  জব্দ এসব গাড়ির প্রকৃত মালিক কারা- বিআরটিএর মাধ্যমে সেটি যাচাই করে দেখছে সিআইডি।

এদিকে পরীমণি, পিয়াসা, মৌ, হেলেনা জাহাঙ্গীর, নজরুল ইসলাম রাজসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা হয়েছে।  এর মধ্যে ৮টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।  পরীমণিসহ অন্য ৬ জনের বাসা থেকে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।  জব্দ করা ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য রাসায়নিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।  আর আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা হলেও অন্য অভিযোগও খতিয়ে দেখছে সিআইডি।

এ বিষয়ে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ-মহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল আইজিপি) ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম এসেছে।  এ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।  এমন তথ্য ছড়ালে অনেকের সম্মানহানি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে।  যদি আমরা কাউকে না ডাকি, তাহলে বুঝতে হবে- তিনি ওই মামলায় সম্পর্কিত কেউ নন।  পরীমণি-পিয়াসাকেন্দ্রিক মামলাগুলোর তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনেককে ডাকা হচ্ছে।  জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের ডাকা হবে, তাদের কোনো তালিকা হচ্ছে না।  এ নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা মামলাগুলোর তদন্তের স্বার্থে কথা বলতে অনেককেই ডেকেছি।  সামনে হয়তো আরও অনেককে ডাকব।  তবে এখনই কাউকে অভিযুক্ত বা দোষী করার সুযোগ নেই।  পরীমণি-পিয়াসা সবার বিরুদ্ধে মাদক মামলার বাইরেও ‘ব্ল্যাকমেইলিং’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ পাওয়া গেছে।  সেগুলোর সত্যতা জানতে অনেককেই ডাকছি।  কাউকে ডাকা হচ্ছে অভিযোগের ভিত্তিতে, আবার কাউকে ডাকা হচ্ছে সাক্ষী হিসেবে।’

সিআইডির প্রধান আরও বলেন, ‘অভিযোগের ব্যাপারে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।  তবে কিছু মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।  অভিনেত্রী ও কথিত মডেলদের কাছে যাতায়াতকারীদের কোনো তালিকা হচ্ছে না।  আইন অনুযায়ী এমন তালিকা তৈরির সুযোগও নেই।  সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত অভিযানে ১৫টি মামলা হয়েছে।  তার মধ্যে ৮টির তদন্ত আমরা করছি।  মামলার সব মিলিয়ে আসামি ১০ জন।’

পরীমণি-রাজকে নতুন করে রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘আরও প্রশ্নের উত্তর জানতে কয়েকজন আসামিকে ফের রিমান্ডে নিয়েছি। মামলাগুলোর দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি তাদের বাসায় আবারও তল্লাশি করে ৩টি জিপ, ১টি ফেরারি কার, ১টি বিএমডব্লিউ, ১টি মাজদাসহ ৬টি গাড়ি জব্দ করেছে।  গাড়িগুলো কার নামে রয়েছে, কে ব্যবহার করত- তা জানতে বিআরটিএ থেকে কাগজ যাচাই করছি।  যথাযথভাবে আমদানি করা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে।’

তদন্তাধীন বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে কোনো খবর প্রকাশ না করতে সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কারও বিদেশযাত্রায় এখন পর্যন্ত কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি।  যদি দরকার হয় তবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে। অবৈধ কোনো বিষয় পেলে সেটা কারা আনল, কীভাবে আনল, কে পয়সা দিল, সোর্স কোথায়? – এসব তদন্তের আওতায় চলে আসছে।  আসামিদের সম্পদ ও আয়ের উৎসও যাচাই করা হচ্ছে।’

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.