270871

অনুরাগকে শায়েস্তা করতেই কি রাজনীতিতে পায়েল?

গত মাসের শেষ দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন বলিউডের বাঙালি অভিনেত্রী পায়েল ঘোষ। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালের হাত ধরে রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়ায় নাম লিখিয়েছেন এই নায়িকা। পায়েলকে স্বাগত জানিয়ে মহিলা মোর্চার সহ-সভাপতি করেছেন দলের সভাপতি মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালে। কিন্তু পায়েলের এভাবে হঠাৎ রাজনীতিতে নামা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন অনেকে। সেটা যে সত্যি, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সেই ইঙ্গিতই দিলেন নায়িকা।

কিন্তু পায়েলের উদ্দেশ্য কী? গত সেপ্টেম্বরে বলিউডের প্রভাবশালী চলচ্চিত্র নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন অভিনেত্রী তথা নয়া রাজনীতিবিদ পায়েল ঘোষ। মুম্বাইয়ের একটি থানায় তিনি অভিযোগও লিখিয়েছেন। সেই মামলার কদিন পরই তিনি রাজনীতিতে নামলেন। এ প্রসঙ্গে পায়েল বলেন, অনুরাগের বিরুদ্ধে মামলা করতে গিয়ে পুলিশের কাছে জানতে পারি, এ রকম ভূরিভূরি অভিযোগের ফাইল পড়ে আছে, যার কিনারা হয়নি। তাই রাজনৈতিক প্রভাব থাকলে আমার মামলার ফাইলে অন্তত ধুলো জমবে না।’

তাহলে কি পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন পায়েল, নতুন করে এই প্রশ্নই উঠছে নায়িকার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশের পর। কেননা, পায়েল যখন অনুরাগের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন, সে সময় বাঙালি অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়ান মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালে। এমনকি তিনি অনুরাগের সিনেমা বয়কটের ডাকও দেন। তার কিছুদিন না যেতেই তিনি নিজের রিপাবলিকান পার্টি অব ইন্ডিয়ায় পায়েলকে বড় একটি পদও দিলেন। এ সব আয়োজন কি তবে অনুরাগকে টেক্কা দিতে?

পায়েলের অভিযোগ ছিল, ২০১৩ সালে পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ তার একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেয়ার নামে নিজের ফ্ল্যাটে ডেকে তাকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই ঘটনায় মামলা করতে সাত বছর অপেক্ষা করতে হলো কেন? পায়েলের জবাব, ‘বারবার চেষ্টা করলেও আমার ম্যানেজার ও পরিবারের কাছ থেকে বাধা পেয়েছি। সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা বলার মতো কাউকে পাশে পাইনি। এবার রামদাসজি এবং তেলুগু একটি চ্যানেল পাশে দাঁড়ানোয় অনুরাগের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাই। মা-বাবাকেও পাশে পেয়েছি।’

কিন্তু সাত বছর আগে কী ঘটেছিল অনুরাগের ফ্ল্যাটে, যা আজকের মামলার বিষয়বস্তু? পায়েল বলেন, ‘আমার ম্যানেজার অনুরাগের সঙ্গে ওর অফিসে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন। কয়েক দিন পর তিনি আমাকে নিজের ফ্ল্যাটে ডাকেন। সেখানে পৌঁছে ওর হাতে মদের গ্লাস ছাড়াও কটু গন্ধ পাই। কিছুক্ষণ পর উনি পাশের ঘরে গিয়ে হঠাৎই আমাকে কাছে টানেন। বারবার ‘লেট মি গো’ বলা সত্ত্বেও ছাড়েননি। কয়েকজন অভিনেত্রীর নাম বলে আমাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। তার পরের ঘটনাগুলো মামলার স্বার্থে এখন বলা যাবে না।’

তবে অনুরাগের দাবি, সব অভিযোগই মিথ্যা। এ প্রসঙ্গে পায়েলের বক্তব্য, ‘ঘটনাটি অনেক আগের। তাই কিছু প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেছে। পুলিশ তদন্ত করে বের করুক সত্যিটা কী। মুম্বাই পুলিশ তদন্তে অনেক সময় নিচ্ছে বলে আমার ধারণা। আরও দেরি হলে যেটুকু প্রমাণ আছে তাও নষ্ট হয়ে যাবে। মামলার শুরুতেই আমাকে হেনস্থা হতে হয়েছে। মামলার স্বার্থে একটি মেডিকেল টেস্ট করাতে গিয়ে চার ঘণ্টার পরিবর্তে চারদিন সময় লেগেছে। কিন্তু আমিও হাল ছাড়ছি না, এর শেষ দেখে ছাড়ব।’

পাঠকের মতামত

Comments are closed.