268893

ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলা, খুনির রায় নিয়ে যা বললেন বিচারক

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দু’টি মসজিদে হামলা চালানো ব্রেন্টন ট্যারান্টকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন স্থানীয় আদালত। দেশটির ইতিহাসে এটাই প্রথম এ ধরনের সাজার ঘটনা।
টানা চতুর্থদিন শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাপী আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন ক্রাইস্টচার্চ আদালতের বিচারক ক্যামেরন ম্যান্ডার।

রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত টারান্টের উদ্দেশে বিচারক বলেন, আপনি নিজেকে মানসিকভাবে চরম অসুস্থ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যে কি না নিজের থেকে ভিন্ন মনে করা অন্য মানুষদের ঘৃণা করে।

তিনি আরো বলেন, আপনি যে ক্ষতি করেছেন তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা বা জনসম্মুখে স্বীকারোক্তি দেননি।

শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদে বিশ্বাসী টারান্টের উদ্দেশে বিচারক বলেন, আপনি একটি গণহত্যা চালিয়েছেন। আপনি নিরস্ত্র ও প্রতিরোধবিহীন মানুষদের হত্যা করেছেন।

দণ্ডের রায় ঘোষণার আগে উচ্চৈস্বরে দীর্ঘসময় ধরে টারান্টের হামলার শিকার ব্যক্তিদের বর্ণনা এবং তাদের স্বজনদের মন্তব্য পড়ে শোনান বিচারক ম্যান্ডার। এ সময় আবেগ্লাপ্লুত হয়ে পড়ায় দু’বার থেমে যেতে হয় তাকে।

ভুক্তভোগী একটি পরিবারের কথা উল্লেখ করে বিচারক বলেন, তাদের ক্ষতি অসহনীয়। আপনার কর্মকাণ্ড তাদের পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে, যেভাবে ধ্বংস করেছে আরো অনেক পরিবারকে। এ সময় নিহত প্রিয়মানুষটির নাম শুনে স্বজনদের অনেককেই চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।

ক্রাইস্টচার্চ হামলায় সর্বকনিষ্ঠ ভুক্তভোগীর নাম মুকাদ ইব্রাহিম। টারান্টের গুলিতে প্রাণ হারানোর সময় তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। মুকাদের কথা উল্লেখ করে বিচারক বলেন, এত ছোট বাচ্চা হারানোর পর কোনো মা-বাবাই স্বাভাবিক হতে পারবে না।

চলতি সপ্তাহে টানা চারদিন ধরে হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি ও ভুক্তভোগী পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য আদালতের শুনানিতে অংশ নেন। তাদের সবাই অস্ট্রেলীয় নাগরিক টারান্টের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন এবং তিনি যেন কোনোভাবেই আর কখনো মুক্ত হতে না পারেন সেই ব্যবস্থা নিতে বিচারকের কাছে অনুরোধ জানান।

গত বছরের ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে বন্দুক হামলা চালায় ২৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ওই হামলায় নিউ জিল্যান্ড প্রবাসী ৫ বাংলাদেশি নাগরিকসহ ৫১ জন মারা যান, আহত হন আরো অনেকে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.