268196

ভয়ংকর চেহারা তারপরও আমিই হাসমতের বউ

 

ডেস্ক রিপোর্ট: ভালোবাসার জন্য অনেকের নির্দ্বিধায় প্রাণ দিয়ে দেয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। একজন মানুষ অন্যজনের প্রেমে পড়বেই, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। প্রেম-ভালোবাসা ছাড়া জীবনে সুখ চিন্তা করা কঠিন। ভালোবাসাই জীবনে প্রকৃত সুখ বয়ে আনে। ভালোবাসা বয়স, জাত, রুপ কিছুই মানে না।
তবে বর্তমান যুগে এই ভালোবাসার ধরণ একদম পাল্টে গেছে। আগের মতো সত্যিকারের ভালোবাসার দেখা এখন খুব কমই মেলে। তাই বলে সত্যিকারের ভালোবাসা হারিয়ে গেছে এমনটাও নয়। আমাদের আজকের গল্পটি সত্যিকারের ভালোবাসার তেমনই একটি প্রমাণ।

১৯৯৫ সালে বাঘের আক্রমণে মুখের অর্ধেক অংশ বিশ্রীভাবে নষ্ট হয়ে যায় হাসমতের। চেহারা এত ভয়ংকর ছিল যে, কেউ ভয়ে তার সামনে আসত না। আর সেখানে বিয়ে করা তো দূরে থাক। তবে না, হাসমতের বিয়ে হলো। ছবির এই মেয়েটাকে হাসমত বিয়ে করলেন।

হাসমতের স্ত্রী নিজের ভাষায় জানালেন এমন ভয়ংকর চেহারার কাউকে বিয়ে করার পর তার অনুভূতির কথা।

হাসমত ও তার স্ত্রী তিনি বলেন- আমাদের বিবাহিত জীবনের প্রথম দিকে আমি মেনে নিতে পারিনি যে আমার স্বামীর অর্ধেক চেহারা নেই। বিয়ের প্রথম রাতে আমি তাকে আমার থেকে দূরে থাকতে বলি। সে আমার সিদ্ধান্ত কে সম্মান জানিয়ে আমার থেকে দূরে থাকতো, কারণ আমি তাকে ভয় পেতাম। তারপর দিন দিন সে আমার প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে থাকে। এত বছরে সে একবারও আমাকে ছাড়া রাতের খাবার খায়নি। তার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং সমবেদনায় তার প্রতি আমার অনুভূতি পাল্টে যায়। আমি দেখতে পাই সে মন থেকে কত সুন্দর। আমি এই অর্ধ চেহারার মানুষটাকে ভালোবাসি।

এই সুন্দর মনের নারীর নাম জিজ্ঞেস করা হলে তিনি নিজের নাম বলতে রাজি হননি। লাজুক হাসিতে গর্বের সঙ্গে বলেন আমার একটাই পরিচয়, আমি হাসমতের বউ।

এমন গভীর ভালোবাসার কাহিনীগুলো সবসময় অগোচরেই থেকে যায়। আজকের প্রজন্ম ভালোবাসা বলতে বোঝে উত্তম-সুচিত্রার রোমান্টিসিজম, লাইলি-মজনুর গল্প, সম্রাট শাহ্জাহানের তাজমহল কিংবা টাইটানিক ছবির বাঁধভাঙ্গা প্রেম। অথচ এই বিশাল পৃথিবীতে এসবের বাইরেও কত নিখাদ ভালোবাসার হৃদয়ছোঁয়া গল্প রয়েছে তার কতটুকুইবা আমরা জানি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.