268038

দুই পা নেই তবুও সে রেসলিং চ্যাম্পিয়ন

মানুষ কঠোর পরিশ্রম, অধ্যাবসায় আর মনোবল দিয়েই পৃথিবী জয় করেছে। এর অনেক নজির রয়েছে আমাদের সমাজে। এমনকি জন্মগতভাবে কিংবা দুর্ঘটনাজনিতভাবে অনেকেই শরীরের একটি অঙ্গ হারিয়ে জয় করেছেন পৃথিবী।

স্বাভাবিক মানুষের চেয়েও তারা ভালোভাবে জীবনযাপন করেন। এমন অনেকের কথাই তো জেনেছেন। আজ এমন একজন অদম্য মনোবলের মানুষের কথা জানাবো যিনি মনের জোড়েই নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বিশ্ব জয় করেছেন।

রেসলিং খেলছে ইসাইয়া বার্ড

রেসলিং খেলছে ইসাইয়া বার্ড

মাত্র ১২ বছর বয়সী এক শিশু। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডের বাসিন্দা ইসাইয়া বার্ড। জন্ম থেকেই বিকলাঙ্গ সে, তার দুটো পা নেই। তবুও রেসলিংয়ে তিনি রীতিমতো চ্যাম্পিয়ন। ইউএফসি মিডলওয়েট চ্যাম্পিয়ন ক্রিস ওয়েডম্যান ইসাইয়ায়ের কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হন তিনি।

২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডে জন্ম তার। ছয় বছর বয়স থেকে তিনি তার জীবনে লক্ষ্য ঠিক করে ফেলেন। যে বয়সে হয়তো আপনি ঠিকভাবে কথা বলা শুরু করেননি। তখনই ইসাইয়া বার্ড হয়ে উঠেছেন শত শত মানুষের অনুপ্রেরণার উদাহরণ।

ইসাইয়া বার্ড খেলছে

ইসাইয়া বার্ড খেলছে

তার এই কাজের জন্যই নিউইয়র্কের পত্রিকার ফ্রন্ট পেজে ছাপা হয় তার কার্যকলাপ। পাঁচ বছর ধরে সে লং বিচ গ্ল্যাডিয়েটরস রেসলিং দলের সঙ্গে যুক্ত। বয়সভিত্তিক গ্রুপে ইসাইয়া স্টেট রেসলিং চ্যাম্পিয়ন। প্রতিটি খেলাতেই তিনি চেষ্টা করেন সাফল্য অর্জন করার। ইসাইয়া শুধু যে রেসলিং করে তা কিন্তু নয়।

সে ফুটবল খেলে, ট্র্যাক চালায়, সাঁতার কাটে, সার্ফ করে এবং স্কেটবোর্ডও চালায়। তবে সবকিছুতেই তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না। সে সফল হয়েছে রেসলিংয়ে। ইসাইয়া তার কোচ মিগুয়েল রদ্রিগেজকে সাফল্যের কৃতিত্ব দিতে চান। কেননা তিনি তাকে এই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

ইসাইয়া বার্ড এখন একজন দক্ষ রেসলার

ইসাইয়া বার্ড এখন একজন দক্ষ রেসলার

একটি সংবাদ মাধ্যমে ইসাইয়া জানায়, সে যখন কিন্ডারগার্টেনে পড়ত। তখন মিগুয়েল রদ্রিগেজের কাছে সে রেসলিং প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করেন। রদ্রিগেজ বলেন, তিনি রাজ্যের অনেক লোকদের কাছ থেকে প্রচুর ই-মেইল, ফোন কল এবং ভিডিও পেয়েছেন। তারা জানিয়েছে যে, তারা সত্যিই ইসাইয়ার কাছ থেকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

রদ্রিগেজের কাছে ইসাইয়া তার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার। তিনি আশা করেন ইসাইয়া একদিন অনেক বড় কুস্তিগীর হবে। পৃথিবীর সব মানুষের আদর্শে পরিণত হবে সে। রদ্রিগেজ বলেন, আমাদের জীবন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। তবে ইসাইয়া এর ব্যতিক্রম। তার কোনো অভিযোগ নেই। জীবন সবসময় অনুকূলে চলে না। তাই ইসাইয়া এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করে সময় নষ্ট করেনি।

ইসাইয়ার এই সাফল্য চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সিনা ওয়েইবোতে ভাইরালও হয়েছিল। এই ছোট্ট যোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নানা মন্তব্য করেন সবাই। একজন বলেন, তিনি আমাকে দঙ্গল সিনেমার কথা মনে করিয়ে দেন। ইসাইয়ার কাহিনী এবং দঙ্গল উভয়ই অনুপ্রেরণামূলক।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.