266932

সবজি বিক্রেতা বাবাকে কুঁড়িয়ে পাওয়া মেয়ের দেয়া হৃদয়স্পর্শী প্রতিদান!

সন্তান প্রতিতি মা-বাবার কাছেই অসম্ভব প্রিয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার ভিন্নটাও দেখা যায়। অনেক মা এমন আছেন যারা এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিজ সন্তানকে ফেলে দেন। পৃথিবীতে সবাই একই মন-মানসিকতার হবে এমনটা ভাবা ভুল। কারণ একজন মা যতটা অনাদরে তার সন্তানকে রাস্তায় ফেলে দেয়, থিক ততোটা আদরেই সেই সন্তানকে অন্য কেউ বুকে তুলে নেয়। এটাই মানবতা। প্রকৃতি তার এই গতিতেই পথ চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।
ডেইলি বাংলাদেশের আজকের আয়োজনে থাকছে এমনই এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনার বর্ণনা, যা অনায়াসেই আপনার চোখে জল এনে দেবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক একজন সবজি বিক্রেতা ও আবর্জনার স্তূপ থেকে কুঁড়িয়ে পাওয়া তার মেয়ের দেয়া প্রতিদানের গল্প।

এই ঘটনাটির সুত্রপাত ঘটে আসামে। আসামের এক গরীব ঘরের সবজি বিক্রেতা নিখিল। প্রতিদিন সকালে সবজি বিক্রি করতে বাজারে যায়, আর সেই সবজি বিক্রির টাকা থেকেই চলে নিখিলের ছোট সংসার। একদিন রাস্তায় প্রতিদিনের মতই সবজি বিক্রি করছেন নিখিল, ঠিক এই সময়ই তার চোখে পড়ে রাস্তার ধারে আবর্জনার স্তূপের মধ্যে কিছু একটা পড়ে আছে এবং সেখান থেকে শব্দ হচ্ছে।

নিখিল দৌড়ে গিয়ে দেখতে পান একটি বাচ্চা শিশু সেখানে কান্না করছে। কাছে গিয়ে দেখেন এটি একটি মেয়ে শিশু। কেউ তাকে এখানে ফেলে গেছেন। নিখিল অবাক হয়ে যান, তবে একজন ভালো মানুষিকতার পরিচয় দিয়ে তিনি ওই বাচ্চা মেয়েটিকে নিয়ে যান তার বাড়ি। এভাবেই ফেলে যাওয়া বাচ্চাটিকে বাঁচান নিখিল। আদর করে মেয়েটির নাম রাখেন মিথিলা। নিখিলের তখন বয়স ছিল প্রায় ৩২ ছুঁইছুঁই। আর সে ছিলেন অবিবাহিতও।

ফলে বাচ্চাটিকে মানুষ করতে তার কোনো ধরণের অসুবিধাই হয়নি। প্রবল দরিদ্রতার মধ্যেও মিথিলাকে তার নিজের মেয়ের মতনই আদর যত্নে মানুষ করেন নিখিল। তাকে বড় করে তোলেন তার সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে। শুধু তাই নয়, অবহেলায় ফেলে যাওয়া মিথিলার ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাকে উপযুক্ত ভাবে তৈরিও করেন নিখিল।

তাকে পড়াশোনা শিখিয়ে করে তোলেন মানুষের মতো মানুষ। যাতে ভবিষ্যৎ-এ মিথিলাকে আর কোনো সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়।

সেই মিথিলাই বড়ো হয়ে একজন আইপিএস অফিসার হয়। বর্তমানে একজন আইপিএস অফিসারের পদে কর্মরত মিথিলাও বহু জায়গায় তুলে ধরেছেন নিখিলের অবদান। মিথিলা নিখিলকেই তার বাবা বলে বর্ণনা করেন সবজায়গায়। সে তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসেন। আর তাই বাবার সপ্নও সে পূরণ করেছেন। তাই স্যালুট জানাতেই হয় নিখিলের মতন এমন দৃঢ়চেতা, উদার মানসিকতার মানুষকে। আর সেই সঙ্গে মিথিলাকেও, যে বড় হয়ে বাবার কষ্টের প্রতিদান তাকে এভাবে সন্মান দিয়ে দিলেন।

পৃথিবীতে মানবতা এখনো রয়েছে। তাইতো আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকার সুখও রয়েছে। একদল খারাপ মানুষের সঙ্গে তাই কখনোই সবাইকে মিলিয়ে ফেলা বুদ্ধিমানের পরিচয় নয়। কারণ নিখিলের মতো উদার মনের বাবাদের দ্বারা বার বার প্রমান হয় যে পৃথিবীতে ভালো ও পরোপকারী মানুশ এখনো রয়েছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.