263356

রাস্তায় পড়ে থাকা মায়ের লাশ দেখতে এলেন না সন্তানরা

সোর্স আমাদের সময় 

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে এক নারী অসুস্থ হয়ে রাস্তায় মারা গেলেও করোনা সন্দেহে তার মরদেহ সন্তানসহ এলাকাবাসী কেউ দেখতে আসেনি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সড়কেই পড়েছিল ওই নারীর লাশ।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাবাড়ি সড়কে ওই নারীর নিজ বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মায়ের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ছেলেমেয়ে এবং তার স্বজনরা মরদেহ নিতে এগিয়ে আসেননি। রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে এলাকার লোকজনও সরে যান। তারা লাশের ধারে কাছেও আসেননি।

তবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় হাজী কছিমউদ্দিন ফাউন্ডেশনের ৩০ জন সদস্য। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত দেড়টার দিকে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। তারপর হাজী কছিমউদ্দিন ফাউন্ডেশনের কর্মীরা মৃত নারীর মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন।

স্থানীয়রা জানান, ওই নারী টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে একা বসবাস করতেন। ছেলেমেয়েরা কেউই সেখানে থাকেন না। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে থাকা একটি ওষুধের দোকানে রক্তচাপ মাপতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর খবর পেলেও শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে, এমন সন্দেহে লাশ গ্রহণ করতে আসেননি ছেলেমেয়ে ও স্বজনরা।

পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন বিধি মেনে নমুনা সংগ্রহ করেন। আজ বুধবার সকালে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়।

হাজী কছিমউদ্দিন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম এম হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘অসুস্থ হয়ে একজন নারী রাস্তায় পড়ে আছে শুনে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। মৃত নারীর ছেলেমেয়ে ও স্বজনরা খবর পেয়েও লাশ গ্রহণ করতে আসেনি। পরে আইইডিসিআরের সদস্যরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেলে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা লাশ দাফন করেন।’

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, ‘মৃত নারী বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। তিনি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত নারীর ছেলেমেয়েরা খবর পেয়েও লাশ গ্রহণ করেনি।’

পাঠকের মতামত

Comments are closed.