207082

ইমরানের রিভার্স সুইংয়ে ভারতে ফিরলেন অভিনন্দন, কিন্ত তারপর কি?

অনলাইন সংস্করণঃ- ক্রিকেটের পরিভাষায় একে কি বলা যায়, রিভার্স সুইং, ইন্ডিপার নাকি ইয়র্কার। পাকিস্তানের ক্রিকেটে খ্যাতনামা বেলার ছিলেন ইমরান খান। ভারতের সেনারা এখন বলছেন আমাদের প্রভোক করা হলে তারপর আমরা জবাব দেব। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা চরমে বেড়ে গেলে একটি দেশ মাথানত করেনি। এবং দেশটি কি ভারত না পাকিস্তান সেটি কোন বিচারে নির্ণয় হবে ভারতের পশ্চিম সীমান্তে যুদ্ধ নাকি শান্তি স্থাপনের আকাঙ্খায়? গত ৭০ বছর ধরে দুটি দেশের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে বিবাদ ও সংঘর্ষ এমনকি দুটি যুদ্ধ ঘটে গেছে।

সর্বশেষ পাকিস্তানে আটক ভারতীয় বৈমানিক অভিনন্দনকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কি ভুল করলেন? যখন ভারতে আসন্ন নির্বাচনের আগে অভিনন্দনের মুক্তি নিয়ে কঠিন চাপে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তান চাইলে ভারতে নির্বাচনের এ সুযোগ নিয়ে মোদীর ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করতে পারত? কিন্তু ইমরান খান বলছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খায় অভিনন্দনকে মুক্তি দিচ্ছেন তিনি। এই শান্তির আকাঙ্খা বাংলাদেশ সহ সকল সার্কভুক্ত দেশের। সার্ক অচল হয়ে রয়েছে। এতদিনে সার্ক ইউরোপিও ইউনিয়নের আদল পেলে অর্থনৈতিকভাবে দক্ষিণ এশিয়া কতদূর এগিয়ে যেত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সার্কে অভিন্ন মুদ্রা ঘোষণার কথাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কেন সার্ক সম্মেলন হচ্ছে না বা কেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো কোনো পরাশক্তি হয়ে ওঠার ইচ্ছায় একটি দেশের দাদাগিরির কাছে বারবার একাট্টা হয়ে উন্নয়ন ও সহযোগিতার নতুন দিগন্তে পৌঁছাতে পারছে না তা ভেবে দেখার সময় এসেছে বৈকি? যদি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তা না ভেবে দেখতে পারে তাহলে চীন তার অর্থনৈতিক উন্নয়নে একধরনের আগ্রাসী নীতিতে এসব দেশকে মুক্তোর মালায় গেঁথে ফেলবে। উন্নয়ন হবে কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলবে। যদি চবাহার বন্দরে ভারত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারে তাহলে বাংলাদেশে কেন গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ ঝুলে থাকবে। এই ঝুলে থাকার মধ্যে দাদাগিরি আছে কিন্তু দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মুক্তির কোনো পথ নেই। উন্নয়ন হবে তবে তা হবে অন্যকোনো দেশের পরিপূরক অর্থনীতির হয়ে ওঠা নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতির। বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম হয়ে ওঠার পর তা কখনো মেনে নেবে না।

ভারতীয় বৈমানিক অভিনন্দন যখন তার বাবাকে জড়িয়ে ধরবে আনন্দে তখন একজন কাশ্মীরি মায়ের ইচ্ছা হবে তার তরুণ ছেলে জড়িয়ে ধরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার। কারণ কাশ্মীরি শিশুদেরও অধিকার রয়েছে ভারতীয় সেনাকে পাথর না ছুড়ে নিজের জীবনকে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে দেয়ার। কারণ সে জানে যুদ্ধ ও ঘৃণার মূল্য কত? সে এও জানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী জিনিস ঘৃণা নয়, যুদ্ধ নয় তা হচ্ছে ভালবাসা। কারণ মৃত্যুর চেয়ে জীবন অনেক সুন্দর। ভবিষ্যতে ভারতীয় বৈমানিক অভিনন্দন যদি পাকিস্তানে কিংবা কাশ্মীরে বেড়াতে যান তাহলে তার হাতে ক্ষেপণাস্ত্র নয়, থাকবে ফুল এ আশা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সকল মানুষের।

সূত্র আমাদেরসময়.কমঃ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.