195206

সন্তান মেধাবী হওয়ার পূর্বাভাস

প্রতিটি সন্তানই তাঁর বাবা-মায়ের কাছে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত উপহার বা আশীর্বাদস্বরুপ। প্রত্যেক বাবা-মায়ের কাছেই তাঁর সন্তান শিশু থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত ভালোবাসার, সবার থেকে আলাদা। তবে শিশু বয়সে সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন থাকে বেশি, তাদের মেধাবী এবং সর্বোৎকৃষ্ট হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলে। কিন্তু কিছু কিছু শিশু পরিণত হওয়ার আগেই বেশ বুদ্ধিমত্তার ছাপ রাখে তাঁর কাজকর্মে। এমন বিশেষ কিছু লক্ষণ বা পূর্বাভাস নিয়ে থাকছে আলোচনা-

সবার থেকে একটু এগিয়ে

যদি দেখেন আপনার শিশু আশেপাশের সব শিশু থেকে ইতিবাচকভাবে একটু আলাদা, তাহলে বুঝবেন সে হয়তো অন্যভাবে চিন্তা করে। নির্ধারিত বয়স হওয়ার আগেই তাদের মধ্যে পরিণত ভাব চলে আসতে পারে। বয়সের তুলনায় তার ভাষা আয়ত্বের ক্ষমতা বেশি হতে পারে। দেখা যাবে তাদের বাক্যগঠন বা শব্দের অর্থ বোঝার দক্ষতা অল্প বয়সেই পক্ক হয়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন প্যাটার্ন চেনার দক্ষতা

শিশুরা বয়স বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন রং আর আকারের প্যাটার্ন চিনতে আর সেগুলো মিলিয়ে খেলা শেখে। তাদের চোখ আর মস্তিস্ক আস্তে আস্তে বাছাই আর একটা থেকে আরেকটা আলাদা করতে শেখে। সেটা অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট বয়সে গিয়ে। যদি দেখেন বয়স তুলনায় শিশু রং আর আকারের প্যাটার্ন মেলানোর কাজটা বেশ নিখুত, নির্ভুল আর চটজলদি মিলিয়ে খেলতে পারছে, তাহলে সে অবশ্যই মেধাবী।

পৃথিবী সম্পর্কে কৌতুহলী

বাচ্চারা এমনিতেই পৃথিবীর সব বিষয়ে কমবেশি আগ্রহী থাকে। কিন্তু যারা একটু বেশিই মেধাবী কৌতুহলের পাশাপাশি তাদের জানার আগ্রহ থাকে যে পৃথিবীর সবকিছু কীভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে তাদের জানার আগ্রহ অনেক বেশি থাকে। জানার জন্য বাবা-মাসহ আশেপাশের সবাইকে বিভিন্ন প্রশ্নের মধ্যে রাখে।

প্রিয় বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান বা কৌতুহল

সব শিশুরই আলাদা পছন্দের কোনো না কোনো বিষয়ে কৌতুহল থাকে। দেখা যায় সেই বিষয় নিয়েই তাঁর যত ভাবনা বা প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়। এভাবে তাঁর ভেতরে সেই বিষয়টি সম্পর্কে মোটামুটি জানা হয়ে যায়। এমনকি একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির চেয়ে তাঁর মধ্যে সেই জ্ঞানের চর্চা বেশি, জানার পরিমাণও বেশি। তাকে সে বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলেই সব উত্তর দিতে পারছে। এমনটা হলে বুঝতে হবে শিশুটি অবশই অন্যদের থেকে আলাদা।

বড়দের সান্নিধ্য পছন্দ করবে

শিশুরা সাধারণত তাদের সমবয়সী বা তাদের আশেপাশের বয়সীদের বেশি পছন্দ করে। তাদের সঙ্গে খেলাধুলা, ঝগড়া বা সময় কাটানোতে তাদের স্বাচ্ছন্দ্য বেশি থাকে। কিন্তু কিছু শিশুরা তাদের চেয়ে বেশি বয়সীদের সান্নিধ্য বেশি পছন্দ করে। হতে পারে সে বাবা-মা বা পরিবার, আশেপাশের কেউ। এমনটা হলে বুঝতে হবে সে তুলনামূলক মেধাবী।

মনোযোগী

যেকোনো কাজ মনোযোগ দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিশুরা সাধারণত কোনো কাজে বেশিক্ষণ মন দিতে পারেনা। কিন্তু একটু বিশেষ মেধার শিশুরা যে কাজ পছন্দ করে বা তার সামনের কোনো বিষয়ে খুব ভালো ফোকাস দিতে পারে, খুব মনোযোগ দিয়ে সেই কাজ করতে পারে। এটা তাঁর অন্যতম একটা অভ্যাস হতে পারে। আর নিজের পড়াশুনার ব্যাপারেও সে যথেষ্ট মনোযোগ দেবে। এটা দেখে একটা মেধাবী শিশুকে আলাদা চিহ্নিত করা যায়।

নেতৃত্বের মনোভাব

নেতৃত্ব দেওয়ার মানসিকতা সাধারণত একটু পরিণত বয়সে দেখা যায়, যখন তারা আশপাশটা একটু করে বুঝতে শেখে। কিন্তু এটা শিশুদের মাঝেও হতে পারে। এবং অবশ্যই সেটা বুদ্ধিমান শিশুদের ক্ষেত্রে। এরা সাধারণত এদের সমগোত্রীয় এবং সমবয়সীদের মধ্যে নিজেকে নেতার মতো করে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে, মতামত প্রদানে, সমস্যার সমাধানে সে অন্যদের মাঝে বেশ আধিপত্য বজায় রাখে।

তারা পড়তে পছন্দ করবে

পড়াশুনার পাশাপাশি এমনিতে মজার বা পছন্দের বিষয়ে পড়াশুনার অভ্যাস বেশ ছোটবেলা থেকে গড়ে ওঠে। কিন্তু অতি বুদ্ধিমান শিশুরা ছোটবেলা থেকে রীতিমত পড়ার প্রতি আসক্ত হয়ে উঠতে পারে। এটা তাদের বিভিন্ন বিষয় জানা এবং কৌতুহল নিবৃত্ত করে। দেখা যায় সময় পেলেই সে পছন্দের বই পড়ছে, সেগুলো নিয়ে ভাবছে, সেগুলো নিয়ে পরে অন্যদের সঙ্গে আলাপ করছে। এতে করে তাঁর ভেতরের সৃজনশীলতারও চর্চা হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/

পাঠকের মতামত

Comments are closed.