চীনের ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’ যেকোনো দিন আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে
ডেস্ক রিপোর্ট : নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া চীনা স্পেস স্টেশন তিয়াংঅং-১ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে বলে মনে করছেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)-এর বিজ্ঞানী। স্পেস স্টেশনটির পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে ইএসএ।
ইএসএ-এর ‘স্পেস ডেব্রিস’ অর্থাৎ মহাকাশের আবর্জনা পর্যবেক্ষণ অফিস বলছে, তিয়াংঅং-১ স্পেস স্টেশনটি মার্চের ৩০ থেকে এপ্রিল ২ তারিখের মধ্যে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। তবে তারা একই সাথে সতর্ক করে দিয়েছে, অনেকগুলো কারণে এই হিসাব ভুল প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চীনের ম্যান্ড স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস আশা করছে, মহাকাশে গবেষণার জন্য তৈরি ল্যাবটি মার্চের ৩১ থেকে এপ্রিল ৪ তারিখের মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে।
বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বলছে, নিয়ন্ত্রণহীন স্পেস ল্যাব তিয়াংঅং-১ জনবসতি বা মানুষের উপর এসে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই কম। কিন্তু এটি ঠিক কখন কোথায় আছড়ে পড়বে তা কেউ নিশ্চিত হতে পারছে না।
তিয়াংঅং-১ চীনের প্রথম স্পেস ল্যাব বা মহাকাশ গবেষণাগার। এর নামের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’। মহাকাশ জয়ে চীনের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনায় তিয়াংঅং-১ একটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
চীন ২০১৭ সালের মে মাসে জাতিসংঘকে জানায় ৮.৫ টন ওজনের তিয়াংঅং-১ মার্চ ১৬, ২০১৬ তারিখে ‘কাজ করা বন্ধ’ করে দিয়েছে। কিন্তু কেন এটি অকেজো হয়ে পড়েছে সেটি চীন উল্লেখ করেনি।
অস্ট্রেলিয়ার একটি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী অ্যালান ডাফি বলেন, স্পেস ল্যাবটি সম্পর্কে চীন গোপনীয়তা বজায় রাখায় এর হুমকি সম্পর্কে সঠিক অনুমান কঠিন হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মহল জানে না, নভোযানটি কী দিয়ে তৈরি। একারনে এটির বিপদ সম্পর্কে অনুমান করা কঠিন। এর জ্বালানি রাখার শক্ত পাত্র পৃথিবীর মাটিতে আছড়ে পড়লেও, এটির হালকা প্যানেল বা কক্ষগুলো মাটি পর্যন্ত আসবে না।’
অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফোর রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি রিসার্চের পরিচালক মারকাস ডোলেন্সকি বলেন, ‘আকাশ পরিষ্কার থাকলে পর্যবেক্ষকরা আকাশের বুক চিরে আগুনের গোলা ছুটে আসতে দেখতে পারেন। এটি এখন জ্বলতে জ্বলতে শেষ হওয়ার জন্য এগিয়ে আসছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপে এটির গতি আসতে আসতে কমে যাবে।’
মহাশূন্যে সাত বছরের অভিযান শেষ করে চীনের স্পেস স্টেশন তিয়াংঅং-১ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ছুটে আসছে।