ভিনগ্রহীরা আছে, তারাও আমাদের দেখছে, বিপদ আছে : স্টিফেন হকিং
স্থান-কালের সম্পর্ক কী, কোথা থেকেই বা এর সূচনা? অনাদি অনন্তের গভীরে কি শূন্য বলে কিছু ছিল? জটিল এসব প্রশ্নই সহজ করে বুঝিয়েছিলেন স্টিফেন হকিং। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণার জন্য জগৎজোড়া খ্যাতি লাভ করেন তিনি। মহাজাগতিক পদার্থবিদ্যার ওপর তার বই ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ ১ কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।
তবে কৃষ্ণগহ্বর কিংবা বিগ ব্যাং- এই কয়েকটা আবিষ্কারের বেষ্ঠনিতে আটকানো যাবে না লোকটাকে। কারণ স্টিফেন হকিং নিজেই একটা বিশাল অ্যাচিভমেন্ট। এই শতাব্দীর সেরা পদার্থবিদদের তালিকা হলে হকিং এর জায়গাটা সবার প্রথম। তিনি আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছেন প্রতিদিন। গ্র্যাভিটেশন, কসমোলজি, কোয়ান্টাম থিয়োরি ও ইনফরমেশন থিয়োরি তার অনন্য সৃষ্টি।
কাকতালীয় হলেও বিজ্ঞানী গ্যালিলেও গ্যালেলির মৃত্যুর ঠিক ৩০০ বছর পর ৮ জানুয়ারি ১৯৪২ সালে জন্ম হয়েছিল স্টিফেন হকিংয়ের। তার মৃত্যু হলো বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের জন্মদিনে। ব্রহ্মাণ্ডের রহস্য নিয়ে গবেষণায় অন্যতম এই বিজ্ঞানীর মৃত্যু যেন একটি নক্ষত্রের পতন।
আইজ্যাক নিউটন বা আইনস্টাইনের পর আধুনিক বিশ্বের ‘জিনিয়াস’ বিশেষণটি যদি ব্যবহার করা হয়, তবে তা স্টিফেন হকিংয়ের জন্যই প্রযোজ্য। মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত এই জিনিয়াসের শুধু মাথা কাজ করে। রেট্রো-রোবোটিক ভয়েসই ছিল তার ভরসা। আর বাকিটা বিস্ময়…।
ভিনগ্রহীদের নিয়ে গবেষণা করে তিনি বরাবরই বলেছেন, ভিনগ্রহীরা আছে। যেমন করে আমরা তাদের খুঁজছি, তেমনি তারাও আমাদের খুঁজছে। হয়তো তারা আমাদের চেয়ে প্রযুক্তিতে আরো বেশি এগিয়ে। হতে পারে তারা আরও শক্তিশালী। ভিনগ্রহীদের কাছ থেকে বিপদ আসার আশঙ্কাও করেছেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে হকিং জানিয়েছিলেন, একদিন আমরা হয়তো এ রকম কোনও গ্রহ থেকে সিগন্যাল পেতে পারি। তবে ওই সিগন্যালের জবাব দেওয়ার বিষয়টা ভালোভাবে ভেবে দেখতে হবে। এমনও তো হতে পারে ব্যাকটেরিয়াদেরকে আমরা যে দৃষ্টিতে দেখি এলিয়েনরাও আমাদেরকে একই দৃষ্টিতে দেখতে পারে।
শুধু তাই নয়, গত বছর তিনি সাবধান করে বলেছিলেন, ৩০ বছরের মধ্যেই পৃথীবী ছাড়ার চেষ্টা করুন, নইলে বিপদ। তার মতে জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, পৃথিবীবে জায়গার অভাব হবে। ব্ল্যাকহোল, সুপারনোভা, সোলার রেডিয়েশনের প্রভাবে পৃথিবীতে মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে উঠবে। তিনি বলেছেন, ‘পৃথিবীতে বেঁচে থাকার উপকরণ দ্রুতই কমছে।’
জিনিয়াসদের ভবিষ্যতবাণী মিলে যায়। তাই বিশ্বকে বাঁচাতে বড় ভরসার জায়গা স্টিফেন হকিং।