182374

অন্যরকম বাড়ি

মোহাম্মদ ছায়েম: অন্য সব বাড়ির মতো এ বাড়িতে নেই আলাদা বেডরুম। বড়সড় একটা সোফাকেই খাট বানিয়ে ঘুমান বাড়ির কর্তা। হুট করে কোন অতিথি হাজির হলেও হয় না কোনো সমস্যা। কারণ রুম অনেক। লম্বা হাঁটা পথটাকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে বানানো হয়েছে রুম।

আর সব বাড়িওয়ালার মতো ব্রুস ক্যাম্পবেলও নিজের বাড়িটি রাখতে চান ঝকঝকে-চকচকে। এমনকি ধুলাবালিও বাড়িতে ঢুকতে দিতে নারাজ তিনি। সে জন্য ঢোকার সময় সবাইকে মানতে হয় কিছু নিয়ম কানুন। দরজার বাইরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে টিস্যু বা রুমাল দিয়ে হাত-পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে তারপর ঢোকেন সাংবাদিক ও দর্শনার্থীরা। সঙ্গে নিতে পারেন না প্লাস্টিক দ্রব্য।

বাড়িটি যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন অঙ্গরাজ্যের য়োইন বনে। সেই ১৯৯৯ সাল থেকে বিমানবাড়িটি নিজের মতো করে সাজিয়ে তুলছেন। যদি কোন কারণে বিমানের নিচের চাকা গুলো ভেঙে যায়, তাহলে মাটিতে খুব বেশি বসে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ চাকার চারপাশে কাঠের খুঁটি দিয়ে বজায় রাখার চেষ্টা হয়েছে ভারসাম্য।

আর সব বাড়ির মতোই এবাড়িতে আছে টয়লেট, গোসলখানা। আছে ব্যাটারিচালিত বিদ্যুৎ। টয়লেটের পাশে আছে সাবানের র‌্যাক। জামাকাপড় ধোয়ার জন্য ওয়াশিং মেশিন তো আছেই, আরো আছে অবসরে গান শোনা বা অন্যান্য কাজের জন্য কম্পিউটার।

তবে অন্য সব বাড়ির সঙ্গে এটা পার্থক্য অনেক। আগুন নিরোধক বাড়িটিতে নেই ছারপোকার উৎপাত। এমনকি ভয়ংকর ভুমিকম্প হলেও তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বিমানবাড়ির্ চারপাশে অবারিত সবুজ।

জীবনটা বিমানের মধ্যেই কাটিয়ে দিচ্ছেন ব্রুস। একাকিত্বে ভোগেন না মোটেও। খাওয়াদাওয়া সেরে আরামে ঘুম দেন। এরপর বের হন ঘুরতে। তন্ময় হয়ে শোনেন পাখির ডাক, কখনো গা শিউরে ওঠেন কোনো পশুর ডাকে।

৭২৭ জাম্বো বিমানের মধ্যে বানানো বাড়িটি ঘুরে দেখতে আসের অনেকেই। বিমানের পাখাকে ব্যবহার করছেন ‘ইমার্জেন্সি এক্সিট’ বা জরুরি নির্গমনপখ হিসেবে। গরম লাগলে বা বাড়ির মধ্যে ভালো না লাগলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বেরিয়ে আসেন জানালা দিয়ে। দাঁড়িয়ে যান লাগোয়া পাখার ওপর। বনের ফুরফুরে বাতাস খেয়ে আবার ঢুকে পড়েন ভেতরে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.