182265

পরপর তিনবার তালাক বললেই তালাক হয় না

নূসরাত জাহান: তিন তালাক নিয়ে ভারতে অনেক দিন ধরেই বিতর্ক চলছে। এ ইস্যুতে মামলাও চলছে। মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারধীন। ধর্মের দোহাই দিয়ে তিন তালাককে বৈধ বলে দাবি করেছে অনেক ইসলামি সংগঠন। কিন্তু মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরীফে বিবাহ বিচ্ছেদের তিন তালাক প্রথা বৈধ নয়, এটা নিষিদ্ধ। তারপরও এ প্রথার বৈধতা দেওয়ার জন্য অনকেই প্রানান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৮৫ শতাংশ মুসলমান প্রকৃত অর্থ না বুঝেই কোরআন পড়েন। এতেই মানব জাতির কল্যাণকর সব কথাই বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা আছে। তবে আরবি ভাষায় লেখা এ গ্রন্থ অর্থ না বুঝেই পড়ে যায় সবাই। জানার চেষ্টাও করি না এতে কী লেখা আছে। আর এ সুযোগ নিয়ে সুযোগ সন্ধানী মোল্লারা ফতোয়া দেয়।

সুরা আল-বাকারায় ইসলামি আইনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। সুরার ২২৬-২৪১ আয়তে তিন তালাকের বিষয়ে বর্ণনা করা আছে। এখানে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি যদি ভুল বা ইচ্ছা করে এক তালাক উচ্চারণ করে তাহলে তা সংশোধনের সুযোগ থাকে। এজন্য তিনি চার মাস সময় পাবেন। এর মধ্যে দুই পক্ষ একত্রিত না হলে দুই তালাক। তখন নারীকে তিন মাস সময় দেওয় হয়। এই সময়ের মধ্যে স্বামীর অীধকার আছে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষকেই যদি একসঙ্গে থাকার ব্যবাপারে সম্মত হতে হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় তালাকের মধ্যবর্তী সাত মাস সময়ের মধ্যে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব দুজনকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে তবেই তিন তালাক দিতে পারে স্বামী। এ থেকে স্পষ্ট যে পরপর তিন তালাক বললে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় না।

ভারতে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি মুসলিম নারী সংগঠন এবং তিন তালাকের মাধ্যমে কয়েকজন তালাক প্রাপ্ত নারীর করা মামলার এ প্রথা নিয়ে নতুন করে আলোচনা চলছে। প্রধানমন্ত্রীসহ বিজেপি-র শীর্ষ নেতারা বারবার এ প্রথা তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিন তালাকের বৈধতা নিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। তিন তালাক নিয়ে এক মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, তিন তালাকের এই বিধান ভারতের মুসলিম নারী অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।

অনেক মুসলিম সংগঠন এবং নারী অধিকার সংগঠন এই রীতি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন বহুদিন ধরে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, এর ফলে অনেক মুসলিম নারী চরম আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। বিচ্ছেদের কারণে সন্তান লালন-পালন নিয়ে সমস্যায় পড়েন নারীরা।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.