182109

হিজাব পরেই বাস্কেটবল খেলতে পারবেন নারীরা

মোফাজ্জল হোসেন: কর্মক্ষেত্রে নারী যেমন সফলতার পরিচয় দিয়েছে, তেমনি ক্রীড়াঙ্গনেও ছড়িয়েছে দ্যুতি। ফুটবল, ক্রিকেট থেকে শুরু করে যে কোন আন্তর্জাতিক খেলায় নারীরা এখন নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। তবে ক্রীড়াঙ্গনে ঐতিহ্য ও ধর্মীয় কারণে নারীদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যেমন হিজাব বিতর্কের কারণে এতদিন মুসলিম বিশ্বের নারীরা পেশাদার আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি।

তবে আশার কথা হচ্ছে, সম্প্রতি হিজাব পরে বাস্কেটবল খেলার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল ফেডারেশন -ফিবা। এখন থেকে নারীরা শরীর ঢেকে এবং মাথায় হিজাব পরে আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন। ইহুদী নারীরাও চাইলে ইয়ারমাক (মাথা ঢাকার টুপি) পরে খেলতে পারবেন। তবে হিজাব কেমন হবে সে ব্যাপারে ফিবা সামান্য শর্ত জুড়ে দিয়েছে। যেমন হিজাব এমন হবে যেন তা মুখমণ্ডলের কোন অংশ ঢেকে না ফেলে এবং হিজাব হবে দল কর্তৃক নির্ধারিত। পরিবর্তিত এই আইনটি চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে কার্যকর হবে।

হিজাব নিয়ে প্রথম বিতর্ক দেখা দেয় ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে। ফিবার নিয়ম অনুযায়ী, কোন খেলোয়াড় মাথা ঢেকে বা হিজাব পরে খেলতে পারবে না। হিজাবের উপর ফিবার এই নিষেধাজ্ঞা মানতে পারছিল না বেশ কয়েকটি দেশ। কারণ তা এই দেশগুলোর প্রচলিত পোশাকবিধির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। যেমন সে বছর এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণকারী কাতার নারী দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় হিজাব পরিধান করতেন। ফলে বাধ্য হয়েই বাস্কেটবল থেকে নারী দল প্রত্যাহার করে নেয় মুসলিম দেশ কাতার। তখন ইরানসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ ফিবার প্রতি আহ্বান জানায়- যেন মুসলিম দেশগুলোকে প্রচলিত পোশাকবিধি মেনেই খেলার অনুমতি দেয়া হয়। এছাড়াও বেশ কয়েকটি সংস্থা ফিবাকে এই আইন সংস্কারের জন্য অনুরোধ করে।

ফিবার এই নিয়ম পরিবর্তনের পেছনে, গত দুই বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ক্যাম্পেইন কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে চেঞ্জ ডট অর্গ (change.org) এর ব্যানারে ১ লাখ ৩৭ হাজার স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র জমা দেয়া হয়। এছাড়া ফেসবুক ও টুইটারে হ্যাশ ট্যাগ ফিবা এলাউ হিজাব ক্যাম্পেইনটিও জনমত তৈরিতে ভূমিকা পালন করে।

হিজাব ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এতদিন অনেক মুসলিম নারী বাস্কেটবল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু এখন এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় মুসলিম নারীদের আন্তর্জাতিক পেশাদার বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট খেলায় আর বাঁধা থাকবে না।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.