সেলফ সার্ভিস কি ভোগান্তি বাড়াচ্ছে?
মোহতামীম নাঈম : ১৯৬৭ সালে লন্ডনে অটমেটেড ট্রেলার মেশিন আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রথম সেলফ চেকআউট বা সেলফ সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা আসে। এর কয়েক দশক পরে ১৯৮৪ সালে ডেভিড আর হাম্বেল নামের এক ব্যক্তি প্রথম ফ্লোরিডায় গ্রোসারি শপে সেলফ সার্ভিস প্রচলন করেন। গ্রোসারি শপের কাউন্টারে মানুষের ভিড় কমাতে এবং কেনাকাটাকে আরও সহজ করতে তিনি এই উদ্যোগ নেন। দিন দিন এই পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে উন্নত দেশ থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশের সুপারশপে এখন সেলফ সার্ভিস লক্ষ্য করা যায়। ২০১৩ সালে বিশ্বে সেলফ চেকআউট সুবিধা সম্বলিত দোকানের সংখ্যা ছিলো দুই লাখের বেশি। ধারণা করা হচ্ছে ২০২১ সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে তিন লাখ।
তবে সেলফ সার্ভিসে ক্রেতাদেরকে প্রায়ই নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক ক্রেতাই মনে করেন, কেবল নিজেদের ব্যয় সংকোচনের জন্যই বিক্রেতারা সেলফ সার্ভিস চালু করেন। প্রশ্ন উঠেছে এতে ক্রেতাদের কি লাভ হচ্ছে? বিবিসি’র সাংবাদিক জেনি মুরি মনে করেন, একজন বিক্রেতার বিপরীতে যদি পাঁচটি সেলফ সার্ভিস থাকতো তাহলে সময় বাঁচত এবং ঝামেলাও কম পোহাতে হতো। তবে এক্ষেত্রে পাঁচজন কর্মচারি থাকলে আরো বেশি সময় বাঁচতো। এ নিয়ে তিনি এক গবেষণা করেছেন। তিনি একই পণ্য কর্মচারী এবং কর্মচারী বিহীন আটটি ভিন্ন ভিন্ন দোকান থেকে কেনেন এবং প্রতি ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করেন সেলফ সার্ভিসে বেশি সময় ব্যায় হয়। শুধু তিনি নন অনেক সাধারণ ক্রেতাও বলেছেন সেলফ সার্ভিস অনেক ঝামেলার এবং এতে বেশি সময় ব্যয় হয়।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব স্টার্লিং এর রিটেইল স্টাডি বিভাগের অধ্যাপক লি স্পারকস এর মতে,“বিক্রেতারা চাইলে খুব সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এক্ষেত্রে তাদেরকে ক্রেতার পছন্দের ওপর নজর দিতে হবে। ক্রেতারা যদি মনে করেন বিক্রেতারা কেবল তাদের ব্যয় কমাতে সেলফ সার্ভিস চালু করেছেন, তাহলে তারা এতে অসন্তুষ্ট হবেন। তাই তাদের পছন্দ মতো সেবা দেয়া উচিত”।
এদিকে ক্রেতার বিড়ম্বনা কমাতে বসে নেই প্রযুক্তিবীদরাও। সেলফ সার্ভিসে তারা নিয়ে আসছেন নিত্য নতুন প্রযুক্তি, যাতে করে কেনাবেচা আরও সহজ হয়ে উঠে। সেলফ সার্ভিস চেকআউট প্রযুক্তি এনসিআর এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাস্টি লুডস জানান, “সেলফ সার্ভিস চেকআউট কে আরও বেশি আধুনিক করা হচ্ছে যাতে করে মেশিনে স্ক্যান করলেই পণ্যের ধরণ সম্পর্কে জানা যাবে এবং মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দামের পাশাপাশি একই রকম পণ্যের আকার ও রঙ ঠিক করে দেবে যাতে সহজে ক্রেতারা নির্দিষ্ট পণ্য ক্রয় করতে পারেন।”