181801

হিজাব পরেই চীনা মুসলিম নারীদের প্রতিনিধিত্ব করতে চান রাহমাহ

মোহতামীম নাঈম : চীনের মতো একটি দেশে হিজাব পরে চলাফেরা করা খুব সহজ কাজ নয়। এজন্য একজন নারীকে প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। সেই কাজটিকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন চীনা মুসলিম নারী কুইংফাং। মুসলিম নাম রাহমাহ, যার অর্থ উপহার।

চীনে প্রায় ২৩ মিলিয়ন মুসলমানের বসবাস। তারপরও সেখানে ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। কিংঘাই প্রদেশে জন্ম রাহমাহ’র। বলেন, স্কুলে তাদেরকে নাস্তিকতার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগ পর্যন্ত হিজাব পরতেন না তিনি। কলেজে ওঠার পর রাহমা ইসলামী সংস্কৃতি এবং ধর্ম নিয়ে অনেক পড়াশুনা করার সুযোগ পান। তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নেন যে হিজাব পরবেন তিনি। শুরুতে সবাই ভুল বুঝতো তাকে। অনেকেই রাহমাহকে মানষিক রোগের চিকিৎসা করানোর পরামর্শও দেন। অনেকেই আবার জানতে চান, তিনি কি কোনভাবে শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হয়েছেন কি না বা তার সাথে তাদের কোন যোগাযোগ আছে কি না।

হিজাব পরিধানের কারণেই চাকরি পেতে অনেক সমস্যা হয়েছে রাহমাহ’র। তার প্রথম চাকরি ছিলো নিজ শহর কিংঘাই এর একটি হাই স্কুলে চীনা ভাষা শিক্ষা দেয়া। হিজাব পরিধানকারী কোন নারীকে তারা শিক্ষিকা হিসেবে নিতে চাননি। স্কুল কর্তৃপক্ষ মনে করেন, এতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। হিজাব পরে এতদূর আসতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে রাহমাহকে। এই পথচলা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি আমার ধর্মীয় বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করি এবং রীতিনীতি মেনে চলি। আমি হিজাব পরিধান করি। আমি একজন চীনা হিজাবী নারী। এই মুসলিম পরিচয়ই চীনে আমাকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে। অনেক মানুষই আমাকে এজন্য ভুল বুঝে থাকে। আমি হিজাব পরিধান করে চীনা মুসলিম নারীরদের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।”

২০১২ সালে বেইজিং চলে আসেন রাহমাহ। সেখানে তিনি নিজের একটি স্টুডিও দাঁড় করিয়েছেন। স্টুডিওতে ইসলামী পোষাকের ডিজাইন করা হয়। তিনি চান এর মাধ্যমে মুসলমান নারীদের সৌন্দর্য তুলে ধরতে। রাহমাহ বিশ্বাস করেন, চীনে একদিন হিজাবের সম্মান বাড়বেই। সম্মান বাড়বে হিজাব পরিধানকারীও। একদিন মুসলিম নারীরা কোন সংকোচ ছাড়াই হিজাব পরিধান করে বাইরে ও কর্মক্ষেত্রে যেতে পারবেন এবং এজন্য তাদের কোথাও হেনস্থার শিকার হতে হবে না।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.