’টাইটানিকের’ যেসব তথ্য সিনেমায় আসেনি
সুলতানা সাকি: উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ১০৫ বছর ধরে ডুবে আছে ইতিহাসের বৃহত্তম প্রমোদতরি। ঠিক যেখানে ডুবেছিল সেখানেই ১২ হাজার ৪১৫ ফুট পানির নিচে সাগরের বুকে শুয়ে আছে জাহাজটি। মজার বিষয় হচ্ছে টাইটানিক জাহাজ বানাতে যত খরচ হয়েছে (প্রায় সাড়ে সাত মিলিয়ন ডলার) , তার চেয়েও ঢের বেশি খরচ হয়েছে হলিউডের খ্যাতিমান পরিচালক ডেভিড ক্যামেরনের টাইটানিক সিনেমাটি বানাতে (প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার)। তারপরও এমন অনেক তথ্যই রয়েছে যেগুলো টাইটানিক সিনেমাতে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।
১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল প্রথম সাগরে ভাসে ‘স্বপ্নের জাহাজ’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া টাইটানিক। ব্রিটেনের সাউদাম্পটন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা ছিল এর। প্রায় আড়াই হাজার যাত্রী আর আটশ ক্রু মিলিয়ে ৩৩২৭ জনের মতো আরোহী ছিল।
১৫ এপ্রিল রাত ২টার ২০ মিনিটে আইসবার্গের (হিমশৈল) সঙ্গে সংঘর্ষে প্রথম যাত্রাই অন্তিম যাত্রায় পরিণত হয় জাহাজটির। শত শত প্রাণের সঙ্গে অনেক তথ্যেরও সলিল সমাধি ঘটে। সেই টাইটানিক নিয়ে এখনও গবেষণায় নতুন নতুন তথ্য তুলে আনছেন গবেষকরা।
-২০ হাজার বোতল বিয়ার, দেড় হাজার বোতল ওয়াইন ও আট হাজার সিগার ছিল টাইটানিকে, তবে এর সবই ছিল প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের জন্য।
-থার্ড ক্লাস বা তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ৭০০ আরোহীর গোসলের জন্য কেবল দুটি বাথটাব (চৌবাচ্চা) ছিল। যেখানে প্রথম শ্রেণির সব রুমেই ছিল গোসলের স্বতন্ত্র ব্যবস্থা।
-হিমশৈলের সঙ্গে টাইটানিকের সংঘর্ষের পর আরোহীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়াটা স্বাভাবিকই ছিল। তবে তাদের আতঙ্ক দূর করতে জাহাজের ব্যান্ড দল সঙ্গিত বাজিয়েই যেতে থাকে।
-টাইটানিক যুবে যাওয়ার পর প্রায় ৩৩০টি লাশ পাওয়া যায়। তবে এর মধ্যে ১১৯টি লাশের অবস্থা এতোটাই খারাপ ছিল যে সেগুলো সাগরেই রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
-ডুবন্ত টাইটানিক থেকে যখন সাহায্যেও আবেদন জানিয়ে সংকেত দেওয়া হচ্ছিল, তখ খুব কাছেই ছিল দ্যা ক্যালিফোর্নিয়ান নামের একটি জাহাজ। সংকেত শোনার পরও সেটি সাহায্যে এগিয়ে আসেনি, কারণ জাহাজের ক্যাপ্টেন সাহায্যের কোনও নির্দেশ দেননি।
-যেসব লাইফবোট রাখা ছিল টাইটানিকে সেগুলো যাত্রীদেও প্রায় অর্ধেক লোক বহন করতে পারতো। তবে ধারণক্ষমতার চেয়ে খুব কম আরোহী নিয়েই সেগুলো রওনা করা হয়। প্রথম যে লাইফবোটটি ছাড়া হয় সেখানে ৬৫ জনের ধারণক্ষমতা থাকলেও মাত্র ২৪জনকে ওঠানো হয়।
-যে হিমশৈলের আঘাতে টাইটানিকের যবনিকাপাত, সেটি ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে সাগরে ভাসছে।
-দ্য আটলান্টিক ডেইলি বুলেটিন মানে একটি পত্রিকাও বের হতো টাইটানিকে। যেখানে জাহাজে আলোচনার বিষয়বস্তু থেকে শুরু করে প্রতিনিদের খাবারের তালিকাও স্থান পেতো।
-টাইটানিকের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা সর্বশেষ যাত্রী ২০০৯ সালের ৩১ মে মারা গেছেন। যখন জাহাজটি ডুবে তখন মিলভিনা ডিনের বয়স ছিল দুই মাস।