177467

বিমানবন্দরে থাকেন যারা

নূসরাত জাহান: বিমানবন্দর কখনোই থাকার জন্য উপযুক্ত নয়। তবে ভাগ্যের ফেরে অনেকেই দীর্ঘদিন বিমানবন্দরে থাকতে হয়েছে। এমনই কিছু মানুষ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই।

১. ২০০৪ সালে জাহরা কামালফার ও তার স্বামী ইরানের সরকার বিরোধী বিক্ষোভ করায় গ্রেফতার হর। দুবছর পর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পায় তারা। ওই সময় জাহরাকে বলা হয় তার স্বামীকে ফাঁসি দেওয়া হবে। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন দুই সন্তান কানাডা যাবেন ভাইয়ের কাছে। এজন্য ভুয়া কাগজ বানিয়ে রওনা দিলেন। তারা রাশিয়া ও জার্মানি হয়ে যাচ্ছিল। রাশিয়ার বিমানবন্দর পার হতে পারলেও জার্মানি আর যেতে পারেনি। তাদের রাশিয়া পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাশিয়া তাদের ইরানে ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাইলে জাহরা যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর থেকেই তারা ১০ মাস তারা বিমানবন্দরে ছিলেন। পরে কানাডা কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয় দেয়।

২. চীনের নাগরিক ফেং ঝেংজুহ ২০০৯ সালে জাপানে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। এরপর দেশে ফেরার সময় তাকে চীন কর্তৃপক্ষ দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। এভাবে আটবার তিনি দেশে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে যতদিন না পর্যন্ত তাকে দেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় ততদিন পর্যন্ত তিনি জাপানের বিমানবন্দরেই ছিলেন। এভাবে ৯২ দিন তিনি বিমানবন্দরে কাটিয়েছেন।

৩. ফিলিস্তিনি নাগরিক মোহামেদ আল-বাহিশের সঙ্গে ২০১৩ সালে কাজাখস্তিানের এক মেয়ের পরিচয় হয়। পরিচয়ের কিছুদিন পরেই তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। আল-বাহিশ কাজাখস্তিানে গিয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন। এরই মধ্যে আল-বাহিশ ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজ হারিয়ে ফেলেন। একইসঙ্গে কাজাখস্তিানের ভিসার মেয়াদও শেষ। তুরস্কে যান ভিসার মেয়াদ বাড়াতে। তবে তাকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। এদিকে ভিসা না থাকায় কাজাখস্তানেও তাকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। আবার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষও তাকে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করতে দিচ্ছিল না। এভাবে বিমানবন্দরে ৫ মাস কাটানোর পর ফিনল্যান্ড তাকে আশ্রয় দেয়।

৪. সিরিয়ার নাগরিক ফাদি মানসুর ২০১২ সালে জার্মানি যাওয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়ে। এজন্য তিনি ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে তুরস্ক হয়ে তিনি জার্মানির উদ্দেশে রওনা দেন। তবে মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে তাকে আটকে দেয় এবং তুরস্কের ফেরত পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু তুরস্কও তাকে নিতে রাজি নয়। এভাবে তাকে বিমানবন্দরে আটকে রাখঅ হয়। এভাবে বিমানবন্দরে এক বছর কাটানোর পর অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ তাকে আশ্রয় দেয়।

৫. কেনিয়ার নাগরিক সঞ্জয় শাহ ইংল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ে। উপনিবেশিক আইনের কারণে তারে কাছে ব্রিটিশ ওভারসিস নাগরিকের ভিসা ছিল। তাই তিনি পুরোপুরি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। তবে পুরো কাজ না করেই ২০০৪ সালে দেশ ছাড়েন। বিমানবন্দরে থেকৈ তাকে কেনিয়া পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশ ছাড়ার আগে শাহ কেনিয়ার নাগরিকত্বও বাতিল করে দেন। ফলে তাকে দেশে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এখাবে ১৩ মাস বিমানবন্দরে কাটানোর পর তাকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। সূত্র: লিস্টভারসে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.