176088

ট্রাম্পের প্রাচীর কি পারবে যুক্তরাষ্ট্রকে আলাদা করতে?

নূসরাত জাহান: মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর টেনে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বাঁচাতে’ চায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের আগে থেকেই তিনি প্রাচীর নির্মাণের আওয়াজ ‍দিচ্ছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর তো এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তিনি এ প্রাচীর নির্মাণের কথা বলেছেন। প্রাচীন নির্মাণ করা তার অন্যতম নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। এখন সময় হয়েছে কাজ করে দেখানোর।

চীন পছন্দের না হলেও তাদের প্রাচীর বা গ্রেট ওয়াল ট্রাম্পের খুব পছন্দের। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের এ প্রাচীরটি পছন্দের ছিল। সীমান্তে প্রাচীর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ প্রান্তের মেক্সিকো থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে চাইছে ট্রাম্প। চীন উত্তরাংশ থেকে মঙ্গোল আদিবাসীদের আটকাতে প্রাচীর নির্মাল করেছিল।তবে চীনের প্রাচীর নির্মাণ করতে অনেক শ্রমিকের শ্রম ও প্রাণ দিতে হয়েছে। অন্তত চার লাখ শ্রমিক প্রাণ দিয়েছিলেন চীনের প্রাচীর নির্মাণ করতে।শুধু চীন নয়, স্নায়ু যুদ্ধের প্রথম দিকে পূর্ব জার্মানির কমিউনিস্ট সরকার বার্লিন প্রাচীর গড়ে তোলে। যাতে গণতন্ত্রের হাওয়া যেন পশ্চিম জার্মানিতে আসতে না পারে। পূর্ব জার্মানির সরকারের কাছে এটা ছিল ‘ফ্যাসিস্ট বিরোধী রক্ষাপ্রাচীর’। আর পশ্চিম বার্লিন একে বলেছিল ‘লজ্জার দেওয়াল’। সেই দেওয়ালও টেকেনি। ২৮ বছর পর এটি ভেঙে ফেলা হয়।

চীনের গ্রেট ওয়াল নির্মাণের সময় পেরুর রুপার খনি থেকে রুপা আসতো প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে এশীয় বাণিজ্য পথে। মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তুলতে প্রাচীর নির্মাণ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে কে টাকা দেবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। ট্রাম্প অবশ্য এরই সধ্যে প্রাচীর নির্মাণের জন্য কোনো টাকা দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নেইতো শুরু থেকেই এ প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে বিরোধিতা করে আসছে। তিনি বলেন, প্রাচীর তৈরি করতে কোনো টাকা মেক্সিকো সরকার। শুধু তাই নয়, মেক্সিকোর বেসরকারি নির্মাণ সংস্থাগুলোকেও তিনি এ বিষয়ে সাবধান করে দিয়েছেন যাতে ট্রাম্পের ওই প্রকল্পে শরিক না হয়।

ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, মেক্সিকোর প্রাচীর তৈরি করতে এক হাজার ২০০ কোটি ডলার খরচ হবে। যদিও সিএনবিসির ধারণা, এই পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। তারপরও প্রাচীর নির্মাণের সিদ্ধান্তে অনড় ট্রাম্প।

প্রাচীল কেমন হবে তার নকশাও করার কাজ শুরু হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দিকে থেকে প্রাচীর দেখতে সুন্দর হবে। পাশাপাশি এটি যেন টপকানো না যায় সে ব্যবস্থাও করতে হবে। তবে ইতিহাস বলছে, প্রাচীর তুলে মানুষের গতিপথ আটকানো যায় না। হয়তো ট্রাম্পের এই প্রাচীরও পারবে না।

সূত্র: এবিসি নিউজ।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.