175919

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চীনকে আনা ঠিক হবে না’

নূসরাত জাহান: কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার টানাপড়েন চীনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। বেইজিং চীন-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করেছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ (বিআরআই) এর আওতায় এ প্রকল্প তৈরি করা হবে। তবে ভারত-পাকিস্তানের রেশারেশিতে পড়ে চীন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

চীনের বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লি ও ইসলামাবাদ নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। শুধু শুধু তাদের সমস্যার মধ্যে চীনকে টেনে আনা ঠিক হবে না।

সিপিইসি প্রকল্পের মাধ্যমে পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের গোয়াদর বন্দরকে কাজে লাগিয়ে সরাসরি আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে চীন। যার মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। কিন্তু সার্বভৌমত্বের কারণ দেখিয়ে এ প্রকল্পের বিরোধিতা করছে ভারত।

ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস, চীনের পার্লামেন্টের উপনেতা এবং সাংহাই একাডেমি অব সোস্যাল সায়েন্সের প্রেসিডেন্ট ওয়াং ঝা বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সমস্যা আছে এটা আমি জানি। আমরা কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে গেলে সেটা ভারতের সার্বভৌমত্বের জন্য সমস্যা। তবে পাকিস্তানের কথাটাও তো ভাবতে হবে। এটা পাকিস্তানেরও অংশ বটে। এটা তাদের সমস্যা। এর মধ্যে অহেতুক চীনকে যুক্ত করা ঠিক হবে না।’

হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গোয়াদর বন্দরের সঙ্গে সিপিইসি প্রকল্প নিয়ে ভারতের দ্বিমত আছে এটা আমি জানি। তবে চীনের চোখ দিয়ে যদি দেখেন তাহলে দেখবেন মালাক্কা প্রণালী ও দক্ষিণ চীন সাগরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ভিন্ন পথ চোখে পড়বে না। জাহাজে করে আমাদের অনেক কার্গো আসে। এজন্য আমাদের একটি বন্দরের প্রয়োজন।
ওয়াং বলছেন, চীনই প্রথম দেশ নয় যারা সিল্ক রোড করার প্রস্তাব দিয়েছে। ‘৯০ দশকে জাপান, ২০০৫ সালে হারভার্ডের অধ্যাপক এবং ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন একই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে এ প্রকল্প যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে সবার জন্যই উপকার হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি অর্থনৈতিক উন্নয়নই পারে যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ থেকে সবাইকে সরিয়ে আনতে। তাই আমরা ও শ্রীলঙ্কা এমন একটি বন্দর তৈরি করতে চাইছি। এটা সম্পূর্ণই অর্থনৈতিক কারণে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের সবাই উপকৃত হবো। ইউরোপ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যের মধ্যে দাড়িয়ে আছে উপদ্বীপ হয়ে। ইউরোপে পৌঁছাতে হলে ভারত ও শ্রীলঙ্কার কাছের সাগর দিয়ে যেতে হবে। কারণ অ্যানটারটিকা দিয়ে তো আমরা যেতে পারবো না। কাজেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা উচিত ভারতের।’

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.