175854

ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে মানব পাচার চক্র

নূসরাত জাহান: গৃহকর্মীর কাজে দেওয়ার আশ্বার দিয়ে ভারতীয় এক নারীকে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে বলা হয়, কাজের জন্য তাকে মাসে ৪০ হাজার রুপি মাইনে দেওয়া হবে। উন্নত জীবনের আশায় ওই নারী দালালের হাত ধরে রিয়াদে পাড়ি জমায়। কিন্তু তিনি জানতেন না সেখানে তার জন্য কি বিভৎসতা অপেক্ষা করছে। গৃহকর্মীর কাজের বদলে তাকে বারবার ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে।

ওই নারীর বাড়ি ভারতের গুজরাটে। সৌদিতে তাকে যৌন দাসী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। অনেক নির্যাতন সহ্য করার পর গেল রবিবার তিনি গুজরাটে ফিরে এসেছেন। এ ঘটনায় পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার ঘটনায় গুজরাট ও মুম্বাইয়ের দুই এজেন্টকে গ্রেফতারও করেছে। ওই নারীর মুখেই শোনা গেল তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। এরই সঙ্গে সামনে চলে এলো ভারতের নারী পাচার চক্রের খবর।

ওই নারীর বরাত দিয়ে এক প্রতিমন্ত্রী বলেন, রিযাদে নেওয়ার পর তাকে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেখানে তাকে বারবার ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হতো। ওই ভয়াবহ ঘটনার ট্রমা কাটাতে তাকে গুজরাটের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুধু ওই নারী নয়, ভারতের অনেক নারীকে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করা হয়।

অধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, ভূমধ্য সাগরীয় এলাকা থেকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিল নাড়ু ও কেরালা থেকে অনেক দূর।

গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী ভুপেন্দ্রাশিন চুড়াসামা থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেছেন, ‘ভূমধ্য সাগরীয় এলাকায় ভারতের দক্ষিণাঞ্চল থেকে নারীর পাচারের ঘটনা ঘটছে। পাচারের সঙ্গে জড়িত অনেক এজেন্টের নাম আমরা পেয়েছি। পুলি এ বিষয়ে বড় পরিসেরে তদন্ত শুরু করেছে। এ বিষয়ে অন্য রাজ্যগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে।’

ভূমধ্য সাগরের তীরে অবস্থিত ছয়টি দেশ বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান গৃহকর্মী হিসেবে ৬০ লাখ ভারতীয় কাজ করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগেই নির্যাতনের শিকার হয়।

অধিকার কর্মী শ্রীনিওয়াস বলেন, ‘পশুর মতো ব্যবহার করা হয় গৃহকর্মীদের সঙ্গে। এমনকি যেসব নারীরা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন তারা জানেনও না তাদের কোথায় রাখা হয়েছে। এমন অনেক নারীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কোথায় আছেন-জানতে চাইলে জবাব দিতে পারেন না। ভারতের উটিত ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চলের দেশে গৃহকর্মী না পাঠানো।’ সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.