২০১৯ সালের নির্বাচনে আরো বড় অর্জনের আভাস মোদির
নূসরাত জাহান: ‘আচ্ছে দিন’ এর স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির জোয়ার এসেছিল ভারতে। গত তিন বছরে মোদির সেই জনপ্রিয়তা একটুও করেনি। বরং দিন যতই যাচ্ছে মোদি জোয়ার আরো বাড়ছে। মোদির ধারাবাহিক সাফল্যে থেকে এটা স্পষ্ট যে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপির জয় অবধারিত। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের পর সেই প্রত্যয় আরো দৃঢ় হয়েছে। ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি হবে। এর মধ্যে ‘নতুন ভারত’ এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে চান প্রধানমন্ত্রী।
উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। ১৯৭৭ সালের পর এই প্রথম মোদির দলে এ রাজ্যে এতো বড় জয় পেল। ভোট চলা পাঁচ রাজ্যের মধ্যে অন্তত দুটি রাজ্যে রাজ্য সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ‘অন্যান্য রাজ্যেও বিজেপি তার জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে মোদি আরও বড় ম্যানডেটে নির্বাচন করবে।’
আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৪ সালে বিজেপি জয় পায়। গত তিন দশকের মধ্যে ভারতের সাধারণ নির্বাচনে এটাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় জয়। যদিও নির্বাচনের আগে সমালোচকরা অনেক কথাই বলেছেন। নির্বাচনের ফলাফল তাদের সেই সমালোচনার মোক্ষম জবাব দিয়েছে।
সমালোচকদের মতে, আশ্চর্যরকমভাবে মোদির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তার জনপ্রিয়তা এবং শক্তিশালী প্রতিপক্ষ না থাকায় মোদি রাজত্ব কায়েম হচ্ছে। এর ফলে ভারতে রক্ষণশীল হিন্দুত্ববাদী শক্তি আরো শক্ত হচ্ছে। এতে করে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা মূল রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
গত বছর নভেম্বরে হঠাৎ করেই মোদি ৫০০ ও হাজার রুপির নোট বাতিল করে দেন। দুর্নীতি ও কালো টাকার প্রবাহ রুখতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। তবে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এমন পদক্ষেপ নেওয়ায় ভারতীয়দের বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়েছিল। অনেকে ধারণা করেছিলেন, নোট বাতিলের সেই সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব ফেলবে উত্তর প্রদেশের নির্বাচন। কিন্তু তেমনটি হয়নি। বরঞ্চ উল্টোটাই দেখা গেছে।
মোদির একক কৃত্বিতেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পরই লাখ লাখ বেকার ভারতীয়দের জন্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। যা জনগণের মধ্যে তার জনপ্রিয়তাই বাড়িয়েছে। উত্তর প্রদেশে জয়ের পর মোদি তার ভাষণে বলেন, ‘আমরা হয়েতা কিছু ভুল কাজ করেছি। তবে ভুল কাজ করার পেছনে আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ‘২০২২ সালে ব্রিটিশ শাশকদের কাছ থেকে মুক্তির ৭৫ বছর পূর্তি হবে। এক নুতন ভারত নিয়ে আমরা স্বাধীনতার সেই দিনটি পালন করবো। এই নির্বাচন আমাদের সেই ইচ্ছা পূরণের শক্তি জোগালো। ১২৫ কোটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ভারতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা ৫ বছর সময় পেয়েছি। ’সূত্র: আল-জাজির।