174719

যার কারণে লাদেনকে ধরা সহজ হয়েছিল

নূসরাত জাহান: আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের আস্তানায় যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছিল। ওই তৎকালিীণ পাকিস্তান সরকারে এ অভিযান সম্পর্কে আগে থেকেই কিছু জানতো না বলে দাবি করেছিল। তেবে বিষয়টা একেবারে তাদের অগোচরে হয়নি। কিছুটা আভাস তারা পেয়েছিল। ওই অভিযানের পথ সুগম করে দিয়েছিলেন দেশটির সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি। সম্প্রতি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিক এক প্রবন্ধে হাক্কানি নিজেই সেকথা স্বীকরা করেছেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার পর তৎকালীন জর্জ ডব্লিউ বুশের সরকার পারভেজ মোশাররফ সরকারের সহযোগিতায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু করে। তবে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ার পুরনো নীতি থেকে সরে আসেনি পাকিস্তান। একদিকে তারা জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালাতে সাহায্য করতো। অন্যদিক আফগানিস্তানের তালেবানদের সহযোগিতা করতো। ২০০৭ সালের শেষ দিকে বুশ প্রশাসন এটা বুঝতে পারলো যে মোশাররফ তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে না বা চাইছে না। এর কিছুদিন পরেই পাকিস্তানে ক্ষমতার পালাবদল হয়। ক্ষমতায় আসে গণতান্ত্রিক সরকার। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির সরকার গঠন করে। ২০০৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতে হিসেবে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর জারদারি ও গিলানি জানায়, মোশারেরফের মার্কিন নীতিতে তারা পরিবর্তন আনতে চান। তারা তালেবানকে সমর্থন বন্ধ করতে চান এবং ভারত ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করবেন। এছাড়া দেশের পররাষ্ট্র নীতিতে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কমাতে চান।

প্রবন্ধে হাক্কানি আরো বলেন, পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর চাপে ২০১১ সালে আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হই। ওই সময় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, পাকিস্তানে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের আস্তানা সম্পর্কেই আমি সিআইএ-কে তথ্য দিয়েছিলাম। বিষয়টা তেমন নয়। ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই আমি সেখানে ছিলাম। কাজেই ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে আমার আগে থেকেই সখ্যতা ছিল। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়ে তারা যখন লাদেনকে পাচ্ছিল তখন তাদের সম্পর্কে তথ্য দিতে ওবামা প্রশাসন আমার কাছে সাহায্য চেয়েছিল। আমি এই তথ্য তৎকালীণ পাকিস্তান সরকারেও জানিয়েছিলাম। তারা এতে সহমতও প্রকাশ করেছিল। কিছু সাহায্য আমি তাদের করেছিলাম। তবে ২০১১ সালে নেভি সিল পাকিস্তানে যে লাদেন বধ অভিযান চালায় সে সম্পর্কে কাউকেই আগে থেকে কিছু জানায়নি।

তিনি লেন, আমার দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়েছিল। এই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই তারা লাদেনর আস্তানার খোঁজ পায়। তবে লাদেনকে পাকিস্তানকে লুকিয়ে রাখতে সামরিক গোয়েন্দা সাহায্য করেছিল। এমনকি ইসলামি জঙ্গিদের ওপর তাদের সুনজর রয়েছে এটাও মার্কিন প্রশাসন বুঝতে পেরেছিল। সূত্র: জিও নিউজ।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.